আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই যে কোনো মানুষের লক্ষ্য হওয়া উচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে মানবজীবন সার্থক হয়। পরকালের মূলধন অর্জিত হয়। আল কোরআনের সূরা আনয়ামের ১৬২ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘বলুন, আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মৃত্যু জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য।’ আল্লাহর প্রতি বান্দার আনুগত্যের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে উপরোক্ত আয়াতে। মহান স্রষ্টা আল্লাহর আনুগত্যই একজনকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। বিশ্বজগৎ তথা মানুষসহ সবকিছুর স্রষ্টা আল্লাহ। মানুষের লক্ষ্যই হওয়া উচিত স্রষ্টায় সমর্পিত হওয়া। অন্যসব লক্ষ্যকে এই মূল লক্ষ্যের উপজাত বা সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। সূরা শুরার ১১ নম্বর আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হচ্ছে, ‘স্রষ্টার মতো কিংবা তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।’ আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। সূরা জারিয়ায় এ বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হলেও তাকে একই সঙ্গে স্বাধীনভাবে ভালোমন্দ বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সূরা দাহরের ৩ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘আমি মানুষকে পথ দেখিয়েছি হয় সে কৃতজ্ঞ হবে বা অকৃতজ্ঞ।’ স্বভাবতই মানুষের দায়িত্ব সঠিক পথ বেছে নেওয়া। আল্লাহ যেহেতু মানুষকে জ্ঞান-বিবেক দিয়েছেন সেহেতু যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া মানুষের কর্তব্য।
আল্লাহ হলেন এমন এক সত্তা কোরআনের ভাষায় যিনি সর্বোত্তম গুণের অধিকারী। সূরা নাহলের ৬০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘সর্বোত্তম মর্যাদাপূর্ণ গুণরাজি শুধুই স্রষ্টার।’ আল্লাহ এমনই এক সত্তা যাঁর বিধান অলঙ্ঘনীয়। তিনি যে বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন তা ধারাবাহিক অপরিবর্তনীয় নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে। সূরা সাবার ৪৩ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘আপনি কখনো স্রষ্টার নিয়মে পরিবর্তন পাবেন না।’ স্রষ্টার সৃষ্ট জীব হিসেবে তৃপ্ত হতে হলে আল্লাহতে সমর্পিত হওয়ার বিকল্প নেই। সূরা রাদের ২৪ নম্বর আয়াত এ বিষয়টি তুলে ধরছে, ‘যাদের বিশ্বাস আছে এবং স্মরণে যাদের হৃদয় প্রশান্ত হয়, তারা জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণেই চিত্ত প্রশান্ত হয়।’ আল্লাহ আমাদের তাঁর প্রতি সমর্পিত হওয়ার তাওফিক দান করুন।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।