ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির তাগিদ দিয়েছে হাই কোর্ট। পাশাপাশি কমিশন নিয়ে প্রেসক্রিপশনে বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ লেখার কারণে ডাক্তারি পেশা নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ। মঙ্গলবার ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের দাখিল করা প্রতিবেদনের ওপর শুনানির সময় উচ্চ আদালতের মন্তব্যটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাধীনতার পর ওষুধ শিল্পে দেশ নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতেও। কিন্তু মানহীন ও ভেজাল ওষুধের অভিশাপ থেকে দেশের মানুষ এখনো মুক্তি পায়নি। ওষুধ কোম্পানির কমিশন খেয়ে প্রেসক্রিপশন লেখার অনৈতিকতা সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে উদ্দেশ করে আদালত বলে, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের ক্ষেত্রে ফার্মেসিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা পর্যাপ্ত নয়। অল্প সাজায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। একই ফার্মেসিতে একাধিকবার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেলে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি আদালত বলেছে, ভেজাল ওষুধের সঙ্গে জড়িতদের যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত। ভেজাল-মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ, বাজারজাত ও বিক্রির কারণে যাদের জেল-জরিমানা হয়েছে, তারা যদি আবার একই ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করতে নির্দেশনা দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযান চলাকালে ১৩ হাজার ৫৯৩টি ফার্মেসি পরিদর্শন করে ৫৭২টি মামলা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল, ভেজাল ওষুধ সংরক্ষণের দায়ে দুটি ফার্মেসি সিলগালা করা হয়েছে। এ ছাড়া একই সময়ে ৩৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়। নকল-ভেজাল ওষুধ এবং ওষুধ কোম্পানির কমিশন নিয়ে প্রেসক্রিপশন করার প্রবণতা সম্পর্কে আদালতের বক্তব্য দেশের মানুষের জন্য মানসম্মত ওষুধ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে
অবদান রাখবে- আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।