বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

যেসব আমলে হজের সওয়াব

যুবায়ের আহমাদ

যেসব আমলে হজের সওয়াব

প্রত্যেক মুমিনের অন্তরই পবিত্র কাবার সঙ্গে এক আধ্যাত্মিক সুতোয় বাঁধা। মুসলিম মাত্রই হৃদয়ের মণিকোঠায় লালন হজের স্বপ্ন। হজের মাধ্যমে গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়।’ বুখারি। বিশেষ কিছু আমলের মাধ্যমেও হাজের সওয়াব লাভের সুযোগ রয়েছে। যেমন ১. ফরজ নামাজের জন্য মসজিদে গমন : ফরজ নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতে পড়া আবশ্যক। মসজিদে গমনকারীর প্রতিটি পদক্ষেপেই গুনাহ ক্ষমা করা হয়, সওয়াব প্রদান করা হয় এবং তার মর্যাদা বাড়ানো হয়। ফরজ নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে গমনকারীর জন্য বিশেষ পুরস্কার হলো, সে ইহরাম বাঁধা হাজীর মতো সওয়াব লাভ করে। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ফরজ নামাজ আদায়ের জন্য নিজের ঘর থেকে অজু করে (মসজিদের দিকে) বের হয়, তার সওয়াব ইহরাম বাঁধা হাজীর মতো হয়।’ মুসনাদে আহমাদ। অন্য হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করল, সে যেন হজ করে এলো।’ তাবরানি।

২. ইশরাকের নামাজ : ইশরাক অর্থ ‘উদয় হওয়া’ বা ‘আলোকিত হওয়া’। শরিয়তের পরিভাষায় সূর্যোদয়ের পর সূর্যের পূর্ণ কিরণ বিচ্ছুরিত হওয়ার পর যে নামাজ পড়া হয় তা-ই ইশরাক। মাত্র দু-চার রাকাত ইশরাকের নামাজের দ্বারা মিলবে হজ ও ওমরাহর সওয়াব। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করে, এর পর বসে থেকেই সূর্য না ওঠা পর্যন্ত জিকির-আজকারে নিমগ্ন থাকে, পরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, সে একটি হজ ও একটি ওমরাহর সওয়াব লাভ করবে। পরিপূর্ণ! পরিপূর্ণ! পরিপূর্ণ!’ তিরমিজি। অর্থাৎ একটি হজ একটি ওমরাহর পরিপূর্ণ সওয়াব লাভ করবে। ৩. ফরজ নামাজের পর সুন্নাত জিকির : ফরজ নামাজের পর সুন্নাত জিকিরগুলো করে হজের সওয়াব লাভের সুযোগ রয়েছে। একবার সাহাবায়ে কিরাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, সম্পদশালী ব্যক্তিরা বেশি সওয়াব ও জান্নাত নিয়ে নিচ্ছে।... তারা হজ করেন, আমরা তা পারি না। তখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল শিখিয়ে দেব না, যা করে তোমরা অগ্রগামীদের স্তরে পৌঁছে যাবে...। আমলটি হলো, প্রতি নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার পাঠ করবে।’ বুখারি। ৪. দীন শেখা ও শেখানোর জন্য মসজিদে গমন : দীন শেখা বা শেখানোর জন্য মসজিদে গমনের মাধ্যমেও হজের সওয়াব লাভ করা যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে গেল কোনো ভালো কথা শেখা বা শেখানোর জন্য সে পরিপূর্ণরূপে হজ আদায়কারী একজন ব্যক্তির মতো সওয়াব লাভ করবে।’ তাবারানি। ৫. রমজানে উমরাহ : রমজানে উমরাহ করার মাধ্যমেও অর্জন করা যাবে হজের সওয়াব। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজানে উমরাহ আদায় করলে আমার সঙ্গে হজ আদায়ের সমান সওয়াব লাভ করবে।’ বুখারি। ৬. পিতা-মাতার সেবা : পিতা-মাতার সেবায়ও মিলবে হজের সওয়াব।

লেখক : জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কারি ও খতিব, গাজীপুর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর