শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইসলামে বিয়েবিহীন যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ

আবুল কালাম আজাদ

ইসলামে বিয়েবিহীন যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ। এ ধরনের অপরাধের শাস্তি বেত্রাঘাত, প্রয়োজনে মৃত্যুদ-। হাদিস অনুযায়ী হাশরের দিন আল্লাহ তিন শ্রেণির লোকের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না, তাদের  পবিত্রও করবেন না। তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি সুনির্ধারিত রয়েছে। তারা হচ্ছে- ‘১. ব্যভিচারী বৃদ্ধ ২. মিথ্যাবাদী শাসক ও ৩. অহংকারী দরিদ্র লোক।’ মুসলিম, নাসায়ি। হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘আমি জানতে চাইলাম, হে আল্লাহর রসুল! আল্লাহর কাছে সবচেয়ে জঘন্য কবিরা গুনাহ কী? তিনি বললেন, কাউকে তোমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা। আমি বললাম, এ তো জঘন্য গুনাহ। এরপর কোনটি? তিনি বললেন, সন্তান  তোমার জীবিকায় অংশীদার হবে- এই ভয়ে তাকে মেরে ফেলা। আমি বললাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া। অনন্তর মহান আল্লাহ এর সপক্ষে এ আয়াত নাজিল করেন, আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যের ইবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন সংগত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না  এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না। এগুলো যারা করে তারা মহাপাপে লিপ্ত। হাশরের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে। তারা সব সময় অবমাননাকর এই শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। তবে যারা তওবা করেছে তাদের কথা স্বতন্ত্র।’ বুখারি, মুসলিম।

এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়াকে আল্লাহর তাওহিদ বা একাত্মবাদ ও অবৈধ নরহত্যার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। বুখারিতে সামুরা বিন জুনদুব (রা.) কর্তৃক বর্ণিত রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্বপ্নের বর্ণনাসংবলিত হাদিসে উল্লেখ রয়েছে- জিবরাইল ও মিকাইল (আ.) রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি তাদের সঙ্গে অগ্রসর হলাম। চলতে চলতে বড় চুল্লির মতো একটি বস্তুর কাছে এসে পৌঁছলাম, যার উপরিভাগ সংকীর্ণ এবং নিম্নাংশ স্ফীত। ভিতরে বহু উলঙ্গ নারী-পুরুষকে দেখতে পেলাম, নিচ থেকে কিছু সময় পরপর অগ্নিশিখা এসে তাদের ওপর দাউ দাউ করে জ্বলছিল, আর তারা সে আগুনের তীব্র উত্তাপ ও দহনে বিকটভাবে চিৎকার করছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওহে জিবরাইল! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা ব্যভিচারী পুরুষ ও ব্যভিচারিণী নারী। তাদের ওপর এ শাস্তি কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে।’ বুখারির এক দীর্ঘ হাদিসের একাংশ। জাহান্নাম সম্পর্কিত আল্লাহর ঘোষণা, ‘জাহান্নামে সাতটি প্রবেশপথ আছে।’ সূরা হিজর। এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে হজরত আতা (রহ.) মন্তব্য করেন, ‘ওই প্রবেশপথগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রখর তাপ, সবচেয়ে বেশি দুর্গন্ধময় এবং সবচেয়ে বেশি দুঃখ-বেদনা ও কষ্ট-ক্লেশে ভরপুর পথে জ্ঞাতসারে ব্যভিচারে লিপ্ত ব্যক্তি প্রবেশ করবে।’

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

 

সর্বশেষ খবর