রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ক্রিকেট কূটনীতি

তিস্তা চুক্তির অচলাবস্থা কেটে যাক

কলকাতার ইডেনে বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট টেস্ট দেখার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ব্যক্তিগত আলাপচারিতা কি তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির দ্বার উন্মোচন করবে? এমন একটি আশাবাদ জোরালো হয়ে উঠেছে। সন্দেহ নেই, খেলা ও রাজনীতি দুটি একেবারেই আলাদা। এর একটির সঙ্গে আরেকটিকে জড়িয়ে ফেলার কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়। খেলার উদ্দেশ্য থাকে মানুষকে নির্মল আনন্দ দেওয়া। সৌহার্দ্যরে পরিবেশ সৃষ্টি করা। খেলার ধন্বন্তরি ক্ষমতার সফল প্রয়োগ ঘটেছিল চীন-মার্কিন সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে। চীন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। অথচ পারমাণবিক শক্তিধর এই দেশটি ১৯৭১ পর্যন্ত জাতিসংঘের সদস্য ছিল না। জাতীয়তাবাদী চীন নামে মূল চীনের হয়ে জাতিসংঘে প্রতিনিধিত্ব করত ফরমোজা দ্বীপ। ১৯৭১ সালের এপ্রিলে মার্কিন টেবিল টেনিস দলের চীন সফরের মাধ্যমে শুরু হয় পিং পং কূটনীতি। দুই পক্ষের যোগাযোগের সূত্র ধরে ফরমোজার বদলে গণচীন জাতিসংঘের সদস্য এবং নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পদ পায়। পায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জগতের স্বীকৃতি। দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্রিকেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দুই দেশের সম্পর্ক যখন তলানিতে তখন ভারতের মাটিতে ক্রিকেট খেলা দেখতে গিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীরা। রাজনৈতিক সম্পর্কের অসুস্থতা নিরাময়ে যা অবদান রেখেছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। তার পরও এ সম্পর্ককে গভীরতর করার ক্ষেত্রে ক্রিকেট সূত্র হয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেট আজকের পর্যায়ে এসেছে। ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি সম্পাদনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তি বাধা হয়ে বিরাজ করছে এক দশক ধরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান সৌরভ গাঙ্গুলীর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলকাতার ইডেনে দুই দেশের দিন রাতের টেস্ট খেলা দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন শুক্রবার। মমতাকে সঙ্গে নিয়ে ঘণ্টা বাজিয়ে খেলার উদ্বোধনও করেছেন। এ যোগাযোগ দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরালো, বিশেষত তিস্তা প্রশ্নে অচলাবস্থার অবসান ঘটালে তা হবে এক বিরাট অর্জন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর