মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রেলওয়ে কথকতা

সংস্কারের উদ্যোগ নিন

কেন ঘটছে একের পর এক রেল দুর্ঘটনা। এ প্রশ্নের সদুত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, মেয়াদোত্তীর্ণ ৭৩ শতাংশ ইঞ্জিন দিয়ে চলছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল ২০ বছর হলেও ৬৬ বছরের পুরনো ইঞ্জিন রয়েছে রেলের বহরে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাদুঘরে ঠাঁই পাওয়া কানাডার জিএম বি-১২ মডেল এখনো ভরসা রেল বিভাগের। মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন, জরাজীর্ণ লাইন, ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতু দিয়ে চলায় কমছে রেলের গতি, বাড়ছে দুর্ঘটনা। কেন সারা দুনিয়ায় সবচেয়ে নিরাপদ হিসেবে পরিচিত রেলপথ বাংলাদেশে অনিরাপদ হয়ে উঠছে তার মূল তত্ত্ব তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। স্বাধীনতার পর দেশের সবকিছুতে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটলেও রেলওয়েতে দেখা মিলছে বিপরীত চিত্র। স্বাধীনতার সময় রেলওয়েতে লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন ছিল ৪৮৬টি। বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ২৭৩টি। তবে এসব ইঞ্জিনের মধ্যে ১৯৫টির মেয়াদ নেই। বর্তমানে মাত্র ৭৮টি ইঞ্জিনের কার্যদক্ষতা রয়েছে। রেলে ২০০৭-০৮ সালে সচল ইঞ্জিন ছিল ২৮৫টি। ২০১০-১১ সালে কমে হয় ২৫৯টি, ২০১১-১২ সালে ইঞ্জিন ছিল ২৯৫টি, ২০১২-১৩ সালে ২৫৮টি, ২০১৩-১৪ সালে ২৯৩টি, ২০১৫-১৬ সালে ২৭৮টি, ২০১৬-১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৭৩টি ইঞ্জিন রয়েছে রেলওয়েতে। মিটার-গেজের ১৪০টি ইঞ্জিনই মেয়াদোত্তীর্ণ। ৩১টি ইঞ্জিনের বয়স ৩১-৪০ বছর এবং ৬৪টি ইঞ্জিনের বয়স ৪১-৬০ বছরের বেশি। আর ৯৪টি ব্রড-গেজ ইঞ্জিনের মধ্যে ২৪টির বয়স ৩১-৪০ বছরের মধ্যে। ৩১টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন ৪১ বা তারও বেশি বছর ধরে চলছে। এই যদি হয় ইঞ্জিনের অবস্থা তবে দুর্ঘটনা যে রেলের অপরিহার্য অনুষঙ্গে পরিণত হবে এমনটিই স্বাভাবিক। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, রেল যোগাযোগ সচল রাখতে এক ধরনের কৃপণতা লক্ষ্য করা গেছে দায়িত্বশীলদের মধ্যে। রেলের জন্য এমন ইঞ্জিন ও বগি বিদেশ থেকে কিনে আনা হয়েছে তাতে অর্থের শ্রাদ্ধই শুধু হয়েছে। সরকার অবশ্য ইতিমধ্যে ৪০টি ইঞ্জিন আমদানির চুক্তি করেছে। আরও ৩০টি কেনার প্রক্রিয়া চলছে। ভারত থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে ২০টি ইঞ্জিন। জানুয়ারির মধ্যে তা পৌঁছবে। আমরা আশা করব শুধু ইঞ্জিন নয়, রেলপথ সংস্কারেও উদ্যোগ নেওয়া হবে। অস্তিত্বের জন্য যা খুবই জরুরি।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর