বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বায়ুদূষণের নগরী ঢাকা

শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার অবসান কাম্য

যানজট, অচল শহরের বদনামের পর নতুন তকমা পেল রাজধানী ঢাকা। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর হয়ে উঠেছে আমাদের রাজধানী। ইটভাটা, মোটরযানের কালো ধোঁয়া এবং যথেচ্ছ নির্মাণকাজে বায়ুদূষণের মাত্রা ক্রমে বাড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার বায়ুদূষণের সার্বিক বিষয় পর্যালোচনায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকার বায়ু ও শব্দ দূষণ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ঢাকাকে দূষণমুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজুয়ালের তথ্যানুযায়ী, ঢাকা শহরের বায়ুর মান গত এক মাস ধরেই অস্বাস্থ্যকর। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের বাতাসে ভাসমান ভারী বস্তুকণা বেড়ে যাচ্ছে। শহরের চারপাশের ইটভাটাগুলোর ধোঁয়া, শহরজুড়ে নির্মাণকাজের খোঁড়াখুঁড়ি আর যানবাহনের কালো ধোঁয়া বায়ুদূষণ ঘটাচ্ছে। বিশ্বের যে পাঁচটি দেশের শতভাগ মানুষ দূষিত বায়ুর মধ্যে বসবাস করে তার একটি বাংলাদেশ। আর বায়ুদূষণের কারণে মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ পঞ্চম স্থানে। বায়ুদূষণে ২০১৭ সালে দেশে মারা গেছেন ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ।  বাংলাদেশে গড় বায়ুদূষণের পরিমাণ ৯৭ দশমিক ১০, পাকিস্তানের ৭৪ দশমিক ২৭, ভারতে ৭২ দশমিক ৫৪, আফগানিস্তানে ৬১ দশমিক ৮০ ও বাহরাইনে ৫৯ দশমিক ৮০ পিএম ২ দশমিক ৫। বাংলাদেশে বায়ুদূষণের উৎস নিয়ে চলতি বছরের মার্চে একটি গবেষণা প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ২০১৩ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে দেশের ইটভাটাগুলোর ওপর একটি জরিপ করা হয়। তখন দেশে ইটভাটা ছিল ৪ হাজার ৯৫৯টি। ২০১৮ সালে পরিবেশ অধিদফতরের জরিপে দেখা যায়, ইটভাটার সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার ৯০২ হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৮৭টি ইটভাটা ঢাকা বিভাগের মধ্যে গড়ে উঠেছে। বায়ুদূষণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে অস্বস্তিকর করে তোলে ও স্বাস্থ্যহানি ঘটায়। দুনিয়াজুড়ে বায়ুদূষণ রোধে যখন জনসচেতনতা গড়ে উঠছে, তখন আমাদের দেশে দূষণের আগ্রাসন অস্বস্তিকর। বায়ুদূষণ রোধে দেশে আইনের অভাব নেই। তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে রয়েছে সীমাহীন শিথিলতা। দেশের মানুষ যাতে স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারে তা নিশ্চিতে বায়ুদূষণ রোধে সচেতন হতে হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দায়বোধ বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর