বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

গুলশানে জঙ্গি হামলার রায়

আত্মঘাতী মতাদর্শবাদীদের শিক্ষা হোক

গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার দায়ে সাত আসামির সবাইকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবর রহমান। ২০১৬ সালের ১ জুলাই দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ওই জঙ্গি হামলায় ২০ জনকে হত্যা করেন নব্য জেএমবি গোষ্ঠীর ধর্মান্ধ সদস্যরা। নিরপরাধ এসব মানুষকে হত্যার জন্য আদালত ওই জঙ্গি হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সাজাই দিয়েছে। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলোন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আবদুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান। দেশের ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস এ হামলায় নয় ইতালীয়, সাত জাপানি, একজন ভারতীয়, একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক ও দুজন বাংলাদেশি হত্যার শিকার হন। এ সময় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম। হামলার পর জিম্মি অবস্থার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল নামে পাঁচ জঙ্গি। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও আট সদস্য। যে কারণে তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। হোলি আর্টিজান জঙ্গি হামলার রায়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদবিরোধী সংগ্রামে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রকাশ ঘটেছে। যে ১৭ বিদেশি এই কান্ড জ্ঞানহীন হামলায় নিহত হয়েছেন তারা বাংলাদেশে এসেছিলেন এ দেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে। এ রায়ের মাধ্যমে তাদের স্বজনরা স্বস্তি পাবেন। বর্বরোচিত হত্যাকান্ড ঘটিয়ে জঙ্গিরা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল সংবাদ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত অভিযান চালিয়ে জঙ্গিবাদীদের নোংরা হাত ভেঙে দিতে সক্ষম হয়। হোলি আর্টিজান জঙ্গি হামলা মামলার রায় দ্রুত বাস্তবায়ন হবে এবং জঙ্গি নামের আত্মঘাতী মতাদর্শের অনুসারীদের জন্য তা শিক্ষণীয় হবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর