মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুই চালকের যাবজ্জীবন

সড়ক নৈরাজ্যে বাদ সাধুক

বাসচাপায় মিম ও রাজীব নামে দুই শিক্ষার্থীকে হত্যা ও কয়েকজনকে আহত করার দায়ে জাবালে নূর পরিবহনের দুই চালক ও এক হেলপারকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। সড়ক নৈরাজ্য যখন প্রতিদিনই কারও না কারও প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে, তখন এ রায়কে দৃষ্টান্তস্থানীয় বলে মনে করা যেতে পারে। রবিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন। দ-প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং হেলপার কাজী আসাদ। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, পরিবহন সেক্টরে চালক-হেলপারদের খামখেয়ালিপনায় সারা দেশেই ছাত্রছাত্রী, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, চাকরিজীবী ও সাধারণ মানুষ দুর্ঘটনায় বাসের নিচে চাপা পড়ে নিহত হচ্ছেন। এ খামখেয়ালিপনা যেন মানুষ হত্যার নেশায় পরিণত হয়েছে। রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে নিহত দিয়ার পরিবার আসামিদের মৃত্যুদ- দাবি করেছে। আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। রায় ঘোষণার পর দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমনকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হেলপার কাজী আসাদ পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। স্মর্তব্য, আগেভাগে যাত্রী তোলার জন্য একই পরিবহন কোম্পানির দুটি গাড়ির চালক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। আগে যাত্রী তোলার জন্য জোবায়ের সুমন তার বাসটি সামনে নিয়ে গিয়ে উড়ালসড়কের ঢালে জায়গা ব্লক করে রাখেন। পেছনে থাকা বাসচালক মাসুম বিল্লাহ তখন আগে যাত্রী তোলার জন্য বাঁ পাশ দিয়ে গিয়ে যেখানে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকেন, সেখানে বাসটি তুলে দেন। এতে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী প্রাণ হারান। আহত হন আরও কয়েকজন। হেলপার বেপরোয়াভাবে গাড়ি না চালানোর জন্য চালক মাসুম বিল্লাহকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি শোনেননি; যা দুটি মূল্যবান প্রাণ শুধু নয়, নিজেদের জন্যও বিপর্যয় ডেকে এনেছে। সড়ক নৈরাজ্য বন্ধে এ রায় হুঁশিয়ারি হিসেবে বিবেচিত হবে সন্দেহ নেই। তবে বাস মালিক ও রুট পারমিট দেওয়ার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা গেলে তাতে সড়ক নৈরাজ্যের মূল হোতাদের জন্য শিক্ষণীয় হতো বলে আমরা মনে করি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর