বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ওয়াসার দূষিত পানি

কর্তৃপক্ষের কুম্ভকর্ণের ঘুম এবার ভাঙুক

ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর দেড় কোটি মানুষের জন্য পানি সরবরাহ করে অর্থের বিনিময়ে। এটি নগরবাসীর প্রতি ওয়াসার দয়াদাক্ষিণ্যের বিষয় নয়, বরং ভোক্তাদের দেওয়া অর্থেই ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু ওয়াসা নগরবাসীকে যে সরাসরি পানের অযোগ্য পানি সরবরাহ করছে তা স্পষ্ট হয়েছে হাই কোর্টের নির্দেশে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদনে। তাতে ওয়াসার পানিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও মলের জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে দাখিল করা প্রতিবেদনে চার দফা সুপারিশও তুলে ধরেছে চার সদস্যের ওই কমিটি। প্রতিবেদনটি অচিরেই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে। বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশে বলা হয়, সুপেয় পানি নিশ্চিতের জন্য ঢাকা ওয়াসা ও দুই সিটি করপোরেশনকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এটি হলে ওয়াসার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যাকটেরিয়া কিংবা জীবাণু পানিতে মিশতে পারবে না। সুপেয় পানির জন্য তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে পুরো বিষয়টি নজরদারি করতে হবে। সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো ও বাসাবাড়ির রিজার্ভ ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। সব ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলা হয়েছে সুপারিশে। ওয়াসার দাবি, তাদের সরবরাহ করা পানি সুপেয়। গত জুলাইয়ে হাই কোর্টের নির্দেশে গঠিত কমিটি জানায়, ওয়াসার পানিতে মিলেছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও মলের জীবাণু। ওই প্রতিবেদনে সায় দেয়নি ওয়াসা। ফলে আরেকটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে পানি পরীক্ষার দায়িত্ব দেয় হাই কোর্ট। ওই কমিটি একাধিক জায়গা থেকে পানির নমুনা জোগাড় করে পরীক্ষা করে তাতে ক্ষতিকর ই-কোলাই ও ব্যাকটেরিয়া পেয়েছে। আমরা আশা করব, ঢাকা ওয়াসা অন্তত এবার নিশ্চিত হবে তারা অর্থের বিনিময়ে ঢাকাবাসীকে যে পানি সরবরাহ করছে তা পানের যোগ্য নয়। এ বিষয়ে কুম্ভকর্ণের ঘুমে আক্রান্ত না হয়ে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেবে। ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হলেই ঢাকাবাসীর পক্ষে সুপেয় পানি পাওয়া সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর