বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পরিবহন চাঁদাবাজি

ওই জংলিপনার অবসান কাম্য

চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের পরিবহনব্যবস্থা। গণপরিবহন ও চাঁদাবাজি যেন অভিন্ন সত্তারই অংশ। বাস-ট্রাকসহ সব ধরনের গণপরিবহনের কাছ থেকে যে চাঁদা আদায় করা হয় তা প্রকারান্তরে যানবাহনের যাত্রী ও পণ্যের ভোক্তাদের বহন করতে হয়। পরিবহন নৈরাজ্য এবং যানজটের সঙ্গেও যে চাঁদাবাজির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে তা স্পষ্ট। মহাখালী, ফুলবাড়িয়া, গাবতলী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালসহ রাজধানীর পরিবহনব্যবস্থায় চাঁদাবাজদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিরাজ করছে কয়েক যুগ ধরে। তাদের ইচ্ছাতেই ঘুরছে লোকাল ও আন্তজেলা পরিবহনের চাকা। গুটিকয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতার নামে চলছে এই চাঁদাবাজি। সাম্প্রতিক শুদ্ধি অভিযানের পর চাঁদাবাজির ভাগাভাগি নিয়ে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। শুদ্ধি অভিযানে নেতা গ্রেফতার হওয়ার পর কে নেবেন চাঁদার টাকা, তা নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। দ্বিতীয় সারির নেতারা চলে এসেছেন সামনে। চাঁদাবাজের চেহারা পরিবর্তন হলেও টাকা আদায় চলছে আগের মতোই। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে স্বীকার করেছেন সড়কে চাঁদাবাজি নতুন কিছু নয়। যতই দিন যাচ্ছে এর মাত্রা বেড়ে চলেছে। এর একটা সুরাহা হওয়া উচিত। রাজধানী থেকে যখন একটি গাড়ি স্টার্ট করে সেখানে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দেবে, এটা ঠিক আছে। এই বাস বা ট্রাকটিকে শেষ গন্তব্যে পৌঁছা পর্যন্ত যেন আর কোনো চাঁদা দিতে না হয়। একইভাবে দেশের অন্য যেসব এলাকা থেকে গাড়ি ছাড়ে সেখানেই শুধু নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বর্তমানে প্রতিটি জেলায় পরিবহন ঢুকলেই চাঁদা গুনতে হয়। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ঢালাও চাঁদাবাজির বিরোধিতা করলেও প্রকারান্তরে চাঁদাবাজির পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন। কোন যুক্তিতে কোনো পরিবহন স্টার্ট দেওয়ার সময় চাঁদা দিতে হবে তিনি তার ব্যাখ্যা দেননি। সভ্য সমাজে বা কোনো সভ্য দেশে এ ধরনের যথেচ্ছতা চলতে পারে কিনা তাও একটি বড় মাপের প্রশ্ন! দুনিয়ার অন্য কোনো দেশে কথিত প্রধান বিরোধী দলের মহাসচিবের মুখে চাঁদাবাজিকে বৈধতা দেয়Ñ এমন ‘অমৃতবচন’ কখনো শোনা গেছে বলে আমাদের জানা নেই! এই জংলিপনার অবসান কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর