শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সড়কশৃঙ্খলা

সম্মিলিত চেষ্টার বিকল্প নেই

সড়কশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সরকারের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যানবাহন চালক, পথচারী সবাই যাতে আইন মেনে চলেন সে ব্যাপারে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে; কিন্তু আসল কাজটি এগোচ্ছে না। চালকরা এখনো আগের মতোই বেপরোয়া। পথচারীরাও যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে সড়ক পারাপারকে অধিকার হিসেবে বেছে নিয়েছে। ফলে ফিরছে না সড়কশৃঙ্খলা, দুর্ঘটনাও কমছে না। রাজধানীতে যানজটের দুঃসহ যন্ত্রণা দিন দিনই বেড়েই চলেছে। সড়ক-মহাসড়কে যথাযথ লেন মার্কিং না থাকায় খোদ রাজধানীতেই গাড়িগুলো লেন মেনে চলছে না। রাস্তার মধ্যে গাড়ি থামিয়েই যাত্রী ওঠানো-নামানো চলছে আগের মতোই। কানে মোবাইল লাগিয়ে রাস্তা পারাপারে পথচারীরা এতটাই বেপরোয়া যে, দ্রুতগামী গাড়ি কড়া ব্রেক কষে থেমে যেতে বাধ্য হয়। এ ব্যাপারে চালকরা পথচারীদের বকাঝকা করলে উল্টো তাদের ওপর চড়াও হন বেপরোয়া পথচারীরা। আগে যাওয়ার প্রবণতায় গাড়িগুলোর মধ্যেও চলে ভয়ঙ্কর প্রতিযোগিতা। ব্যস্ততম রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের চোখের সামনে বাস-মিনিবাসের ঝুঁকিপূর্ণ রেসিংয়ের ঘটনায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, হতাহত হচ্ছেন যাত্রী-পথচারী। এমন হাজারো জঞ্জাল-বিশৃঙ্খলায় সড়ক-নৈরাজ্য কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। নিয়ম অনুযায়ী রাস্তার ডান পাশে থাকবে প্রথম লেন। মাঝখানে দ্বিতীয় আর বাঁ পাশে থাকবে তৃতীয় লেন। প্রথম লেনে কার, মাইক্রোবাস, জিপ ও ভিআইপিদের গাড়ি চলবে। যেসব গাড়ি সামনে গিয়ে ডানে মোড় নেবে সেগুলো এই লেনে থাকবে। মাঝখানের দ্বিতীয় লেনে চলবে বাস, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান। তৃতীয় লেনে অটোরিকশা, হিউম্যান হলার ও টেম্পো। যেসব গাড়ি সামনের ক্রসিংয়ে বাঁয়ে মোড় নেবে সেগুলো এই লেনে থাকবে। লেনে চলার সময় ওভারটেক করা নিষেধ। যথেচ্ছভাবে লেন পরিবর্তনও প্রত্যাশিত নয়। কিন্তু কেউই মানছে না কোনো নিয়ম। গাড়িচালকদের অনেকেই লাইসেন্স পেয়েছেন কোনোরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই। আর পথচারীরা তো মনে করেন তারা যা করবেন তা-ই যথার্থ। রাজধানীতে যানজটের অন্যতম কারণ সড়কশৃঙ্খলার অভাব। রাস্তার এক-তৃতীয়াংশই অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে একসময় অবরুদ্ধ থাকত। অবৈধ পার্কিং সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা কমলেও ড্রেনের ময়লা উঠিয়ে সড়কের একাংশ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে নগরীর অসংখ্য স্থানে। সড়কশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গাড়িচালক, পথচারী, ট্রাফিক পুলিশ সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। কোনো বিশেষ পক্ষের আন্তরিকতা নয়, সব পক্ষের সম্মিলিত চেষ্টায় ফিরে আসতে পারে সড়কশৃঙ্খলা। কমতে পারে দুর্ঘটনা; যার মাধ্যমে নিরাপদ হতে পারে মানুষের জীবন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর