শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডিএপি সারের মূল্যহ্রাস

সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির প্রতিফলন

চারদিকে যখন মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতায় দেশের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে তখন কেজিপ্রতি ৯ টাকা কমানো হলো ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের দাম। কৃষি উপকরণের দাম কমিয়ে কৃষককে লাভবান করার জন্য ডিএপি সারের দাম কমানো হলো। এর ফলে ২৩ টাকা দামের সার এখন থেকে পাওয়া যাবে ১৪ টাকা কেজি দরে। এর ফলে প্রণোদনা বাবদ সরকারের ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। উল্লেখ্য, সরকার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে প্রণোদনা বাবদ। এ অর্থ আসবে সেখান থেকে। উল্লেখ্য, সরকার এ নিয়ে সারের মূল্য পাঁচ দফায় কমাল। ৮০ টাকার টিএসপি সার ২২ টাকা, ৭০ টাকার এমওপি ১৫ টাকা করা হচ্ছে। ডিএপি সারে ১৮ শতাংশ নাইট্রোজেন (অ্যামোনিয়া ফর্মে) আর টিএসপি সারে সমপরিমাণের ফসফেট (অর্থাৎ ৪৬ শতাংশ) রয়েছে। ফলে এ সার প্রয়োগে ইউরিয়া ও টিএসপি উভয় সারের সুফল পাওয়া যায়। ডিএপি ব্যবহারে ইউরিয়া ও টিএসপি সারের ব্যবহার হ্রাস পায়। কৃষকের অর্থ ও শ্রম উভয়ই সাশ্রয় হয়। ডিএপি সারের মূল্যহ্রাসের ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে। অপেক্ষাকৃত কম দাম হওয়ায় ও অভ্যাসগত কারণে এ দেশের কৃষক ইউরিয়া সার বেশি ব্যবহার করেন। ইউরিয়া সার ব্যবহারের প্রভাবে সবুজ উদ্ভিদ আরও সবুজ হয় এবং কীটপতঙ্গের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়। এতে ফসলের জমিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকার আক্রমণসহ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। পরিণতিতে কীটনাশকের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে ডিএপি ফসফেট ও নাইট্রোজেনসহযোগে একটি মিশ্র সার হওয়ায় এর ব্যবহারে গাছ শক্তিশালী হয়, ফসলের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও ফসল পুষ্ট হয়। এতে কীটনাশকের ব্যবহার হ্রাস পায়। ডিএপি সার ব্যবহারের ফলে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে ক্ষতিকর কীটনাশকের আমদানি কমে যাবে। এ সারের মূল্যহ্রাসে সরকারের ৮০০ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় হলেও এ অর্থ প্রকারান্তরে শুধু কৃষক নয়, দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করবে। কৃষি এমন একটি বিষয় যার সঙ্গে সরাসরি প্রতিটি মানুষের খাদ্য চাহিদার সম্পর্ক রয়েছে। তবে শুধু সারের দাম কমিয়ে আনা নয়, কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারকে কার্যকর পন্থা গ্রহণ করতে হবে। কৃষিপণ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও কৃষকের সমৃদ্ধির জন্য যার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর