মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রসঙ্গক্রমে

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হোক সব ক্ষেত্রে

শহিদুল ইসলাম

গ্রহে মানুষ জন্মগ্রহণ করার পর জাগতিক আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠে। গ্রহের বিপর্যয় ঘটুক অথবা মানুষ প্রাকৃতিক নিয়ম লঙ্ঘন করুক এটা শ্রেষ্ঠ জীবের কোনো নমুনা হতে পারে না। সৃষ্টিজগতের শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ তার পাশবিকতার কারণে জগৎকে    ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে চলেছে; যা মানবসভ্যতার জন্য কলঙ্কজনক। মানুষ স্বগোত্রীয় লাখ লাখ লোককে হত্যা করেছে অথবা সম্পদ নষ্ট করেছে। কিন্তু কোনো গাছপালা বা পশুপাখির ক্ষেত্রে এটা দেখা যায় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ইতালি ও জার্মানির  নৃশংসতা-বর্বরতা বিশ্ববাসীকে হতভম্ব করে তোলে। ৬০ লাখ ইহুদি হত্যার অনুমতি বিশ্ববাসীকে নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কায় ফেলে দেয়। তারা জাতি ঊর্ধ্ব সংগঠনের কথা চিন্তা করতে থাকে। যার কথা সবাই মেনে চলতে বাধ্য থাকবে আর এই চিন্তায় ১৯৪৫ সালের জুনে সানফ্রানসিসকো শহরে একটি সনদ অনুমোদনের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ জন্মলাভ করে। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবজাতির অধিকার, মর্যাদা ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০টি অনুচ্ছেদসংবলিত একটি দলিল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়; যার কারণে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। মানুষ সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীব। সে যেমন স্বাধীন থাকতে চায় তদ্রুপ অন্যকেও স্বাধীনতা দিতে চায়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নির্বিশেষে সবাই শিক্ষালাভ, সম্পদ ভোগ, ধর্ম পালন স্বাধীনতার অধিকার ভোগ করবে। চলাফেরায় স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। গোপনীয়তার স্বাধীনতা থাকবে। কাউকে জোরপূর্বক কোনো সংঘবদ্ধ করা যাবে না এবং চাকরিতে যোগদানের সমান সুযোগ থাকতে হবে। সাহিত্য, শিল্পকলা ও বিজ্ঞানচর্চার সৃজনশীল কাজে নিয়োজিত হওয়ার অধিকার থাকবে। কিন্তু আজ বিশ্ব পরিম-লের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখতে পাব বিশ্ব আজ শান্তির প্রত্যাশায় চিৎকার দিয়ে উঠেছে। নির্যাতিত বঞ্চিত অসহায় শ্রেণির লোকের ভিড় বাড়ছে। জাতিগত বিদ্বেষ, সামাজিক নৈরাজ্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও অস্থিতিশীল বিশ্ব পরিস্থিতি জাতিসংঘের অস্তিত্বকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। বিশ্বমানবতা আজ জটিল শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে যা থেকে মুক্তি কীভাবে সম্ভব তা বিশ্ববাসীকে ভাবতে হবে।

সর্বশেষ খবর