মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুর্নীতিবিরোধী লড়াই

জনগণের আস্থা সৃষ্টি জরুরি

দুর্নীতি যে জাতির জন্য অপরিসীম লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণের কোনো অবকাশই নেই। দেশের এমন কোনো সরকারি দফতর নেই যেখানে দুর্নীতি নামে কেউটে সাপ ফণা বিস্তারের সুযোগ পায়নি। সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশের সব অর্জন গোগ্রাসে গিলে খাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে দুর্নীতি নামের নোংরা দৈত্য। আশার কথা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়েছেন। এ উদ্দেশে নিজের দলেই শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে দল ও অঙ্গসংগঠনের বেশ কিছু রথী-মহারথীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। একসময় ঠুঁটো জগন্নাথের মতো নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করত দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক নামের যে প্রতিষ্ঠান, সেখানে প্রাণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। মহাশক্তিধরদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ আনতে পিছপা হচ্ছে না দুদক। গত সোমবার আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের প্রাক্কালে দুদক জানিয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা দেশবাসীর কাছ থেকে প্রচুর সহযোগিতা পাচ্ছে। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুদকে দুর্নীতিসংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে ১৫ হাজার ৪৯৭টি। এর মধ্যে ১ হাজার ১৯৯টি অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয়েছে। বাকি অভিযোগ নথিভুক্ত কিংবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বছর কমিশনে ১৬ হাজার ৬০৬টি অভিযোগ আসে। এর মধ্যে ১ হাজার ২৬৫টি অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়। বাকিগুলো নথিভুক্ত করা হয়েছে কিংবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে কমিশনে অভিযোগ আসে ১৭ হাজার ৯৫৩টি। এর মধ্যে ৯৩৭টি অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করে কমিশন। একইভাবে ২০১৬ সালে কমিশনে মোট অভিযোগ আসে ১২ হাজার ৯৯০টি। তার মধ্যে ১ হাজার ৭টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়। নাগরিকদের কাছ থেকে সরাসরি অভিযোগ শোনার জন্য হটলাইন চালুর পর দুই বছরে গত আগস্ট পর্যন্ত ৩১ লাখ ফোনকল পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুর্নীতির স্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি দফতরে ৬২৬ বার অভিযান চালানো হয়েছে। এসব কার্যক্রমে অনুভব করা যায়, দুদকের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। দুর্নীতিবিরোধী সংগ্রামে যার প্রয়োজনীয়তা গুরুত্বের দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর