বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

স্টপ জেনোসাইড

রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্ববিবেক

শান্তি ও গণতন্ত্রের মূর্ত প্রতীক হিসেবে বিশ্বজুড়ে একসময় নন্দিত হয়ে উঠেছিলেন নোবেল শান্তি পদক বিজয়ী মিয়ানমারের অবিসাংবাদিত নেত্রী অং সান সু চি। মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি তার অঙ্গীকারের কারণে বিগত অন্তত তিনটি নির্বাচনে রোহিঙ্গাসহ দেশের সব নিপীড়িত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অং সান সু চির দলকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমারের শাসন ক্ষমতার কলকাঠি যাদের হাতে সেই সামরিক বাহিনীর সিনিয়র জেনারেলদের সঙ্গে আপস করতে গিয়ে সু চি তার বিশ্বজনীন মর্যাদাকে জলাঞ্জলি দিয়ে খলনায়কে পরিণত হয়েছেন। নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার আনা অভিযোগের মুখে সু চিকে মনে হচ্ছিল নির্বিকার। ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করেছে। বাংলাদেশ এ মামলায় পক্ষ না হলেও গাম্বিয়াকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করছে। অভিন্ন ভূমিকা পালন করছে নেদারল্যান্ডস ও কানাডা। মামলার বাদী গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদুও আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারকদের সামনে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জেনোসাইডের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, ‘মিয়ানমারকে এসব কা-জ্ঞানহীন হত্যাযজ্ঞ, বর্বরতা বন্ধ করতে বলুন। মিয়ানমারের হত্যাযজ্ঞ, বর্বরতা আমাদের সবার বিবেককে স্তম্ভিত করছে। মিয়ানমারকে তার নিজেদের লোকদের ওপর জেনোসাইড বন্ধ করতে হবে। গাম্বিয়ার মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিবেককে জাগিয়ে তুলতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জেনোসাইডের বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতে তুলেছে গাম্বিয়া। ৭৫ বছর আগে বিশ্ব বলেছিল, আর কোনো জেনোসাইড নয়; কিন্তু আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। রোহিঙ্গাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করতে ওআইসির পক্ষ থেকে গাম্বিয়া মামলা করেছে। শুধু রোহিঙ্গাদের রক্ষাই নয়, মিয়ানমারকে জেনোসাইড প্রতিরোধ সনদ মানতে বাধ্য করানোও তাদের লক্ষ্য। গাম্বিয়ার মামলা বিশ্ববিবেককে সচেতন করে তুলেছে। বেশ কয়েকজন নোবেল শান্তিপদক বিজয়ী অং সান সু চিকে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। আমরা আশা করব, নিজেদের স্বার্থেই মিয়ানমার সুমতি ও সুবিবেচনার পরিচয় দেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর