রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলন

ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিন

পাটকল শ্রমিকদের অনশনে খুলনায় ইতিমধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরও বেশ কিছু শ্রমিক। খুলনায় শ্রমিকরা তাদের সহকর্মীর লাশ ছুঁয়ে দাবি আদায়ের শপথ নিয়েছেন। মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনায় গতকাল পঞ্চম দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা। নগরীর খালিশপুর বিআইডিসি সড়কে শ্রমিকরা কাঁথা-বালিশ, বিছানা-কম্বল নিয়ে অবস্থান করছেন। অনশনে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়া প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের শ্রমিক আবদুস সাত্তারের নামাজে জানাজা শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনশনস্থলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও শোকার্ত শ্রমিকরা অংশ নেন। এর আগে সকালে লাশ অনশনস্থলে আনা হলে সেখানে হৃদয়বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়। সহকর্মী শ্রমিকদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় মারা যাওয়া শ্রমিকের লাশ ছুঁয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলন যে স্পর্শকাতরতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা স্পষ্ট। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো শুধু সরকার নয়, জাতির জন্যও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে দেড় শতাধিক বেসরকারি পাটকল রয়েছে। প্রতিটি পাটকল লাভজনকভাবে চলছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো জাতির ঘাড়ে বোঝা হিসেবে বিরাজ করছে চার যুগ ধরে। পাটকলগুলোয় উৎপাদন না করে শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বসিয়ে বেতন দিলেও লোকসানের পরিমাণ কম হবে। অব্যবস্থাপনার জন্যই যে পাটকলগুলো লোকসান গুনছে এটি ওপেন সিক্রেট। আমরা এ লোকসানের জন্য আমাদের দেশের দুর্নীতিপ্রিয় সরকারি কর্মকর্তাদের দোষ দিতে চাই না। কারণ দুনিয়ার সব দেশেই রাষ্ট্রায়ত্ত খাত মানেই লোকসানের ঘানি টানা। ফলে লোকসানের নিয়তি মেনে নিয়ে পাটকল শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হবে বিধেয়, বিকল্প হিসেবে পাটকল শ্রমিক-কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে পাটকলগুলো বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা অথবা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর