শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

হলুদে সিসা

খাদ্যপণ্যে কৃত্রিম রং মেশানো বন্ধ হোক

বাংলাদেশে মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হলুদে বিধিবদ্ধ মাত্রার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারের পরীক্ষায়। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৫২৪টি হলুদের উপকরণ নিয়ে  কেমিক্যাল অ্যানালাইসিস করে ভয়াবহ মাত্রায় সিসার উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও উদ্বিগ্ন। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিসহ এ-সংক্রান্ত একাধিক গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে হলুদের ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং এ সমস্যা মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে তারা। ওই চিঠি পাওয়ার পর ৫ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা করেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে চারটি। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশে অবাধে বিষাক্ত সিসা আমদানি না করার বিষয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কৃষি বা উৎপাদক পর্যায়েও হলুদের রং গাঢ় করার জন্য বিষাক্ত সিসা মেশানোর অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়টি স্থানীয়ভাবে প্রতিরোধের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হলুদে বিষাক্ত সিসার উপস্থিতি জনস্বাস্থ্য বিশেষত শিশুদের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে। বিদেশে বাংলাদেশের হলুদ জাতীয় মসলা রপ্তানির জন্যও তা হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। কয়েক বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের একটি কোম্পানির প্যাকেট হলুদে মাত্রাতিরিক্ত সিসা থাকার অভিযোগ ওঠে এবং পণ্যটি সেখানে নিষিদ্ধ করা হয়। বাংলাদেশের মানুষের দেহে সিসার সহনীয় মাত্রা ৫ মাইক্রো গ্রাম। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ এলাকার মানুষের দেহে তার চেয়ে বেশি সিসার উপস্থিতি রয়েছে। হলুদ রং করার জন্য যে রাসায়নিক রং মেশানো হয় তাতে সিসার উপস্থিতি থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়। এ ছাড়া দেশের কোনো কোনো এলাকার মাটিতে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি রয়েছে। হলুদকে বিষমুক্ত করতে সব ধরনের রং মেশানো বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই। শুধু হলুদ নয়, যে কোনো খাদ্যপণ্যে কৃত্রিম রং মিশিয়ে উজ্জ্বল করার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর