শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্দীশিবিরে ১০ লাখ মুসলমান

নামাজ-রোজায় বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে

মুসলমান হওয়ার অপরাধে চীনে উইঘুর জাতির ১০ লাখ লোককে বন্দীশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। চীন সরকার বিপুলসংখ্যক মুসলমানকে বন্দী করে রাখার কথা অস্বীকার করছে না। তারা বলছে, জঙ্গিবাদ দমনের জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তারা ওইসব মুসলমানকে বিশেষ শিবিরে রাখছে। তাজ্জব ব্যাপার হলো, চীন দাবি করছে চরমপন্থা ও উগ্রবাদ দমনের জন্য তারা যে কৌশল বেছে নিয়েছে তাতে পাকিস্তান, রাশিয়া, সার্বিয়াসহ বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশের সমর্থন রয়েছে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় ইহুদি নিধনের জন্য হিটলারের জার্মানিতে হলোকাস্টের পর চীনের উইঘুর মুসলমানদের বন্দীশালাকে সবচেয়ে বড় বন্দীশিবির বলে মনে করা হচ্ছে। গত ২৪ নভেম্বর ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) উইঘুর অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশে চীন সরকারের গণগ্রেফতার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বলা হয়, উইঘুরদের নিশ্চিহ্ন করতে চীন সরকারের এই ‘নীলনকশা’ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। বন্দীশিবিরে রীতিমতো মগজ ধোলাই করা হচ্ছে এবং বন্দীদের কঠোর অনুশাসন মেনে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে। আইসিআইজের হাতে পড়া সরকারি নথির বেশির ভাগই ২০১৭ সালের। যেগুলোকে পুরো মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে চীন। চীন সরকারের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভিক্টোর গাওয়ের ভাষ্য, এটা বন্দীশিবির নয়। তাদের আটকে রাখা হয়েছে ঠিকই, তবে এটাকে বরং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বলা যেতে পারে। সরকার চরমপন্থা ও বিচ্ছিন্নতাবাদকে এভাবে দমন করতে চাইছে। চীনের দাবি, জিনজিয়াংয়ে উগ্রবাদের বিস্তার যে মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। উগ্রবাদের নানা পর্যায়ে জিনজিয়াংয়ের জনগণকে এসব থেকে বের করে আনতে কিছু কৌশল গ্রহণের প্রয়োজন ছিল। পাকিস্তান সীমান্তবর্তী উইঘুর মুসলমানদের বন্দীশিবিরে ধর্মত্যাগ, নামাজ না পড়া, রোজা না রাখা এবং ইসলামী সংস্কৃতি ত্যাগের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। উইঘুর মুসলমানদের নির্যাতন সওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। ধারেকাছে পাকিস্তানের মতো তথাকথিত ‘ইসলামী দেশ’ থাকলেও সে দেশের

শাসকরা নিজেদের অর্থনৈতিক কারণে চীনের সেবাদাসের ভূমিকা পালন করতেই আগ্রহী। একমাত্র মানবতাবাদী বিশ্বের মানুষ এ বিপদে তাদের সহায় হলে চীন সরকারের সুমতি ফিরতে পারে।

 

 

সর্বশেষ খবর