দেশের শ্রমবাজার ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে পড়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। রেমিট্যান্স আয় যে দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা, সে দেশের শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে পড়া আরও একটি কারণে বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। শ্রম বাজার সংকুচিত হয়ে পড়ায় বছরে কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ নষ্ট হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার আবারও উন্মোচনের সম্ভাবনা বারবার জ্বলে উঠলেও তা মরীচিকা বলে বিবেচিত হচ্ছে। দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে দীর্ঘ আলোচনার পর শেষ মুহূর্তে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। বারবার কর্মী নেওয়ার প্রতিশ্রুতি এলেও শ্রমবাজারের অনিশ্চয়তা কিছুতেই কাটছে না। প্রায় একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারগুলোতেও। বারবার আশার আলো জ্বললেও বাস্তবে ধরা দিচ্ছে না। আরব আমিরাতের শ্রমবাজার নিয়ে শুধু আশ্বাসই পাওয়া যাচ্ছে। সৌদি আরবে নারী কর্মীরা নির্যাতিত-নিপীড়িত হওয়ায় তৈরি করেছে নতুন দুশ্চিন্তা। শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে বাহরাইনেও। জর্ডান, লেবাননও সীমিত সংখ্যক কর্মী নিচ্ছে। মালদ্বীপ সরকার এক বছরের জন্য বাংলাদেশ থেকে কর্মী না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ ধনী দেশ কাতার সরকারও কিছু দিন ধরে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা ইস্যু করছে না। আশঙ্কা করা হচ্ছে কাতারও যে কোনো সময় শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। এক বছর আলোচনার পর গত মাসের শুরুতে মালয়েশিয়ায় দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বন্ধ শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে ঐকমত্য হয়। কথা ছিল নিয়োগ প্রক্রিয়ার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদের ঢাকা সফরে। কিন্তু সে সফর হঠাৎ করেই স্থগিত হয়ে যায়। কায়েমি স্বার্থবাদী একটি মহলের চক্রান্তে দেশের জনশক্তি রপ্তানি খাতে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে বলে অনেকের আশঙ্কা। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে জনশক্তি রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে হবে। জনশক্তি আমদানির ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীর চাহিদা দুনিয়াজুড়ে। এক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় বাংলাদেশের জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি হচ্ছে। বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে সংশ্লিষ্টদের দক্ষ করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। সংশ্লিষ্ট দেশের আইন-কানুন ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও কর্মীদের ওয়াকিবহাল করণের উদ্যোগ নিতে হবে।