সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্যাংক ঋণে নির্ভরতা

অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ

ব্যাংক ঋণের ওপর সরকারের নির্ভরতা বিনিয়োগ ক্ষেত্রে বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। দেশকে দ্রুত উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে চায় সরকার। এ উদ্দেশ্যে ব্যাংক ঋণ নিয়ে হলেও একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দেওয়া হচ্ছে। গড়ে উঠছে একের পর এক সেতু, ফ্লাইওভার, বিদ্যুৎ প্রকল্প, ভবন ইত্যাদি। দেশের উন্নয়নে অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিকল্প নেই। কিন্তু ব্যাংক ঋণ নিয়ে উন্নয়ন কাজের গতি ঠিক রাখতে গিয়ে অন্যদিকে সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। ব্যাংকগুলো বেসরকারি খাতে ঋণ দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তহবিল জোগাড় করতে পারছে না। ফলে অর্থনীতির জন্য সৃষ্টি হচ্ছে অবাঞ্ছিত ঝুঁকি। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাত্র পাঁচ মাসে সরকার যে ঋণ নিয়েছে, তা চলতি বছরের বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রার সমান। অথচ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারের ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। আর মাত্র ১৯৭ কোটি টাকা ঋণ নিলেই চলতি অর্থবছরের ১২ মাসের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পুরো সময়ে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিয়েছিল ২৬ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। সাধারণত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাত নিরুৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য অর্থনীতিবিদরা বরাবরই সরকারকে ব্যাংক থেকে যতটা সম্ভব কম ঋণ নেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে তিন বছর আগে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার বদলে উল্টো বকেয়া ঋণ বেশি মাত্রায় পরিশোধ করেছিল। ব্যাংক ঋণের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের ঋণের সুদের হার বেশি হওয়ায় এবং সঞ্চয়পত্র তুলনামূলকভাবে নিরাপদ বিনিয়োগ হওয়ায় গত কয়েক বছর সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে অনেক বেশি। ফলে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে সরকারকে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু সরকারের ব্যয় চাহিদা পূরণে ব্যাংকবহির্ভূত খাতগুলো যথেষ্ট না হওয়ায় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার গতি ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র পাঁচ মাসে এক বছরের ধার্যকৃত ঋণ নেওয়ায় বিনিয়োগ খাতের অর্থায়ন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যা নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর