বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

গুনাহর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

গুনাহর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে

আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের এই পৃথিবীসহ সব গ্রহ-নক্ষত্র তথা নিখিল বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা। সর্বময় ক্ষমতার একচ্ছত্র অধিকারীও তিনি। সৃষ্টির সেরা মানবজাতির সবকিছুর মালিক-মোকতারও আল্লাহ। মানুষের জীবন-মৃত্যু, সুখ-দুঃখ, মঙ্গল-অমঙ্গল সবকিছু তাঁরই হাতে নিয়ন্ত্রিত। মানুষ চিরশত্রু শয়তান এবং প্রবৃত্তির প্ররোচনায় আল্লাহর আনুগত্য ছেড়ে গুনাহে লিপ্ত হয়। অথচ মানুষকে ভালো-মন্দ গ্রহণ করার শক্তি আল্লাহই দিয়েছেন। উভয় পথের যে কোনো একটি গ্রহণ করা তার এখতিয়ারভুক্ত। কিন্তু মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। ভুল করাটা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটা আদি পিতা আদম আলাইহিস সালাম থেকে পাওয়া উত্তরাধিকার। মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলো সে ভুলের কথা স্বীকার করে এবং অনুতপ্ত হয়, সঙ্গে সঙ্গে সংশোধনের জন্য সচেষ্ট হয়। পক্ষান্তরে শয়তান নিজের ভুল বা অন্যায় স্বীকার করে না, বরং ভুলকে পুঁজি করে অহংকার করতে থাকে। তার নেই কোনো অনুতাপ, অনুশোচনা।

মানুষ ভুলকে স্বীকার করে অনুতপ্ত হয় এবং ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণের চেষ্টা করে। সে আল্লাহর কাছে ভুলের কারণে গুনাহের জন্য ক্ষমা চায়। কখনো কখনো সে নিজের ভুলের কারণে এত বেশি অনুতপ্ত হয়, দুঃখিত হয় যে, মহান আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন এবং এত বেশি মর্যাদা, সম্মান দান করেন যা হয়তো বা দীর্ঘ সাধনা করেও অর্জন করা সম্ভব হতো না।

মানবজাতির আদি পিতা আদম আলাইহিস সালাম শয়তানের প্ররোচনায় ভুল করেছিলেন। কিন্তু তিনি নিজের ভুলের ওপর জিদ ধরে থাকেননি; বরং অত্যন্ত লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত মাথা আকাশের দিকে ওঠাননি। অনুতপ্ত হয়ে স্বীয় ভুলের স্বীকারোক্তি করে মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন। ফলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এই বিশাল পৃথিবীকে সুশোভিত করার উদ্দেশ্যে তাঁর মাধ্যমে মানবজাতির আগমনের ধারা জারি করলেন। আল্লাহ ইরশাদ করছেন, ‘আদম তার পালনকর্তার নির্দেশের পরিপন্থী কাজ করে ফেলল। ফলে পথভ্রান্ত হয়ে গেল। অতঃপর তার প্রতিপালক তাকে মনোনীত করলেন, তার তওবা কবুল করলেন এবং তাকে সৎপথ প্রদর্শন করলেন।’ সূরা ত্ব-হা, আয়াত ১২১-১২২।

আল্লাহ চান মানুষ তার ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে। আদি পিতার অনুসরণে যারাই আল্লাহর দরবারে নিজেদের অক্ষমতা ও ভুলের কথা স্বীকার করবে, নিজেকে অপরাধী সাব্যস্ত করে বিনয় ও নম্রতার সঙ্গে ক্ষমা চাইবে, তারা মহান সৃষ্টিকর্তার ভালোবাসা পেয়ে ধন্য হবে, উত্তরোত্তর তাদের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। গোলাম তার মুনিবের কাছে নিজের ভুলত্রুটির জন্য লজ্জিত হয়ে অবনত মস্তকে রহমত কামনা করবে এটাই স্বাভাবিক। আল্লাহ আমাদের সবার নিজেদের গুনাহর জন্য অনুতপ্ত হওয়ার ও ক্ষমা চাওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি করুন।

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর