বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আমনের বাম্পার ফলন

কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করুন

চলতি বছর দেশে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এজন্য খুশি হওয়ার কথা থাকলেও তা অনেকটা নিষ্প্রভ হয়ে গেছে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার বেদনায়। তবে বোরোর চেয়ে আমনের দাম কিছুটা বেশি হওয়াকে মন্দের ভালো হিসেবেও দেখছেন তারা। চলতি বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে ৫৮ লাখ ৭৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল। তবে চাষ হয়েছে আরও বেশি জমিতে। এ বছর ১ কোটি ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমনে বাম্পার ফলন হলেও মূল্য নিয়ে কোনো কোনো জেলায় অসন্তোষ রয়েছে কৃষকের মধ্যে। কোনো জেলায় প্রতি মণ ধান ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার ৬০০ টাকার মধ্যেও বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে। গতবারের চেয়ে এবার একটু বেশিই মূল্য পাচ্ছে কৃষক। তবে ৬০০ টাকা দরে ধান বিক্রি করলে বোরো মৌসুমের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। কৃষক পর্যায়ে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। আবেদন করলেই অনুমোদন মিলছিল রপ্তানির। কিন্তু হঠাৎ করে দেশের বাজারে চালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রপ্তানি থেকে পিছু হটে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া কৃষকের জন্য নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিণতিতে ধান চাষে উৎসাহ হারাচ্ছে কৃষক। এ অবস্থা চলতে থাকলে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি হবে। সন্দেহ নেই, সরকার কৃষকবান্ধব নীতি গ্রহণ করেছে। এ উদ্দেশ্যে সারের দাম কমানো হয়েছে। বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শুধু ধান নয়, ফসল ঘরে তোলার সময় পিয়াজ, আলুসহ আরও কিছু খাদ্যপণ্যের দামে ধস নামায় কৃষক লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। এ প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলায় সারা দেশে কৃষককে সংগঠিত করে সমন্বয়ের মাধ্যমে কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার তৈরির কথা ভাবা যেতে পারে। এমনটি সম্ভব হলে কৃষক খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহী হবে। তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। গ্রামীণ অর্থনীতির জন্যও তা আশীর্বাদ বয়ে আনবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর