শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্যহাতির উৎপাত

বনজঙ্গল উজাড় রোধ করুন

কিছু লোভী ও কা-জ্ঞানহীন মানুষের জন্য উজাড় হচ্ছে বনজঙ্গল। বন্যহাতির খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সৃষ্টি হচ্ছে হুমকি। এরই অনিবার্য পরিণতিতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে বন্যহাতির দল ছুটে আসছে লোকালয়ে। সৃষ্টি করছে তা-ব। ফসল ও গাছপালা শুধু নয়, বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানিও ঘটছে। এমনিতেই বাংলাদেশ থেকে বন্যহাতি বিলুপ্ত হতে চলেছে। কিন্তু লোকালয়ে হাতি হানা দেওয়ার কারণে ফাঁদে পড়ে অথবা গুলিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় প্রায় ৯০টি হাতি প্রাণ হারিয়েছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লোকালয়ে হাতির আগমন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিষয়টায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। হাতির ঘন ঘন লোকালয়ে আসাকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যে হাতির পালের হাত থেকে জানমাল রক্ষায় নানান উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে ‘এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম’ নামে একটি দল গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগসূত্রে বলা হয়েছে, ২০১০ সাল থেকে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামে বন্যহাতির আক্রমণে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০ জন। হাতির পালের আক্রমণে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এ ছাড়া লোকালয়ে এসে মারা গেছে কমপক্ষে ৯০টি হাতি। চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, লোহাগড়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী উপজেলায় নিয়মিত হানা দিচ্ছে হাতির পাল। বন বিভাগ সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারায় দিন দিন প্রাণহানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি মানুষের ঘরবাড়ি, ফসল বিশেষ করে পাকা ধানের ক্ষতি করায় কৃষক ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। মানুষের প্রাণহানি ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন বিভাগের ওপর ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামে বন্যহাতির লোকালয়ে এসে তা-বের ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় হাতির এই বেপরোয়া আচরণ সামাল দিতে হবে। হাতির জীবন রক্ষার স্বার্থেই তাদের লোকালয় থেকে দূরে রাখা জরুরি। বৃহত্তর চট্টগ্রাম এলাকায় বনাঞ্চল ক্রমেই কমছে। নির্বিচারে কাটা হচ্ছে গাছপালা। একশ্রেণির লোভী মানুষের জন্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। বন্যহাতির উন্মত্ত আচরণ ঠেকাতে হলে লোভী মানুষদের লোভ সংবরণও জরুরি।

গাছপালা, বন সংরক্ষণেও নজর দিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর