সুয়েজ খাল হলো মিসরের সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিমে অবস্থিত একটি কৃত্রিম সামুদ্রিক খাল। এটি ভূমধ্যসাগরকে লোহিত সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। ১০ বছর ধরে খননের পর পথটি ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। উত্তরে ইউরোপ থেকে দক্ষিণে এশিয়া, উভয় প্রান্তে পণ্য পরিবহনে সুয়েজ খাল একটি জলপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, এতে সম্পূর্ণ আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে আসতে হয় না। খালটি উন্মুক্ত হওয়ার আগে কখনো কখনো পণ্য জাহাজ থেকে নামিয়ে মিসরের স্থলপথ অতিক্রম করে, ভূমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগরে ও লোহিত সাগর থেকে ভূমধ্যসাগরে অপেক্ষমাণ জাহাজে পারাপার করা হতো। এর ব্যাপ্তি ভূমধ্যসাগরের পোর্ট সাইদ থেকে লোহিত সাগরের সুয়েজ (আল সুয়েজ) পর্যন্ত। ফার্দিনান্দ দে লেসেপ্স নামক একজন ফরাসি প্রকৌশলী এ খাল খননের উদ্যোক্তা। শুরুতে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১৬৪ কিলোমিটার (১০২ মাইল) এবং গভীরতা ৮ মিটার (২৬ ফুট)। বেশ কিছু সংস্কার ও সম্প্রসারণের পর ২০১০ সালের হিসাবমতে এর দৈর্ঘ্য ১৯০.৩ কিলোমিটার (১২০.১১ মাইল), গভীরতা ২৪ মিটার (৭৯ ফুট) এবং সর্বনিম্ন সরু স্থানে এর প্রস্থ ২০৫ মিটার (৬৭৩ ফুট)। এর মধ্যে উত্তর প্রবেশ চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ২২ কিলোমিটার (১৪ মাইল), মূল খাে ল দৈর্ঘ্য ১৬২.২৫ কিলোমিটার (১০০.৮২ মাইল) এবং দক্ষিণ প্রবেশ চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার (৫.৬ মাইল)। এটি একটি এক লেনবিশিষ্ট খাল যাতে দুটি বাইপাসের স্থান আছে, এগুলো হলো বাল্লাহ বাইপাস ও গ্রেট বিটার লেক। সুয়েজ খালে কোনো লক বা ভিন্ন উচ্চতার নৌপথে জলযান নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত বিশেষ গেট নেই। তাই সমুদ্রের পানি অবাধে এ খালের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সাধারণত বিটার লেকের উত্তর দিকের খালে শীতকালে উত্তরমুখী আর গ্রীষ্মে দক্ষিণমুখী স্রোত প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে লেকের দক্ষিণ দিকের খালে স্রোত সুয়েজের জোয়ার-ভাটার সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।