শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

নামাজ পড়তে হবে জামাতের সঙ্গে

মুফতি হেলাল উদ্দিন হাবিবী

নামাজ পড়তে হবে জামাতের সঙ্গে

ইমানের পর সর্বপ্রথম ও সর্বোত্তম ইবাদত হলো নামাজ। মুয়াজ্জিনের সুমধুর আজানের ধ্বনি শোনামাত্রই সব কাজ স্থগিত রেখে মুমিনরা ছুটে চলেন মসজিদপানে। মহান স্রষ্টার কুদরতি কদমে ললাট রেখে তৃপ্ত করেন স্বীয় মালিকের প্রেম-বিরহে তৃষ্ণার্ত আত্মাকে। ইসলামে জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। দৈনিক পাঁচবার মসজিদে সমবেত হয়ে ধনী-গরিবনির্বিশেষে জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মুসলমানদের মাঝে ঐক্য, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও আনুগত্যের অপূর্ব মেলাবন্ধন তৈরি হয়। মুমিনরা যখন সারিবদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করেন তখন মহান আল্লাহ ফেরেশতাদের সামনে তাঁর নামাজি বান্দাদের নিয়ে গর্ব করেন। মহান আল্লাহ জামাতে নামাজ আদায়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজ পড় নামাজিদের সঙ্গে।’ অর্থাৎ জামাতের সঙ্গে। সূরা বাকারা, আয়াত ৪৩। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে বায়জাবিতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা মুসল্লিদের সঙ্গে জামাতে নামাজ পড়।’

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘জামাতে নামাজ আদায় করা একা আদায় করার চেয়ে ২৭ গুণ উত্তম।’ বুখারি। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ৪০ দিন প্রথম তাকবিরের সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাকে দুটি পুরস্কার দান করবেনÑ ১. জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও ২. মুনাফিকি থেকে পরিত্রাণ।’ বুখারি, মুসলিম। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি স্বীয় ঘর থেকে উত্তমরূপে অজু করে ফরজ নামাজের উদ্দেশ্যে বের হয়, সে ইহরাম বেঁধে হজে গমনকারীর মতো সওয়াব লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি শুধু চাশতের নামাজের উদ্দেশ্যে কষ্ট করে বের হয়, সে ওমরাহ পালনকারীর মতো সওয়াব লাভ করবে।’ আবু দাউদ। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ইরশাদ করেন, ‘কোনো ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা যতবার মসজিদে যাতায়াত করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারির ব্যবস্থা করে রাখেন।’ বুখারি। পক্ষান্তরে যারা জামাতের ব্যাপারে উদাসীন; বিনা কারণে জামাত ছাড়া একা নামাজ আদায় করে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

লেখক : খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ, কাজলা, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর