শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বই উৎসব

সাড়ে ৩৫ কোটি বই পেল শিক্ষার্থীরা

প্রতি বছরের মতো এবারও ১ জানুয়ারিতে বই উৎসবে মেতেছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। এ বছর সোয়া ৪ কোটির বেশি শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে নতুন পাঠ্যবই। প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে অনুশীলন খাতাও। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচি গত সোমবার গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হয়। বুধবার ১ জানুয়ারি উৎসবের মাধ্যমে বই অর্পণ করা হয় শিক্ষার্থীদের হাতে। বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ বর্তমান সরকারের একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। গত কয়েক বছরের মতো এবারও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের নিজস্ব ভাষায় বই বিতরণ করা হয়েছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে ব্রেইল বই। বর্তমান সরকারের আমলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। সরকার শিক্ষাকে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ায় শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দারিদ্র্যমুক্তিও ঘটছে। বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণসহ শিক্ষা খাতে বাজেটের এক উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ যে জাতির জন্য সত্যিকার অর্থেই লাভজনক, তা বাস্তবতার নিরিখে প্রমাণিত হয়েছে। সারা দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪ কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ১৯৮ ছাত্রছাত্রীকে এ বছর বিনামূল্যে ৩৫ কোটি ৩৯ লাখ ৯৭ হাজার ১৯৭ কপি বই বিতরণ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিনেই যাতে বই হাতে পায় তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি স্কুলে আগেভাগে বই পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সুশিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিনামূল্যে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবই বিতরণ ও নারীদের অবৈতনিক শিক্ষার যে পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে তা বিশ্বসমাজেরও প্রশংসা অর্জন করেছে। তবে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় সরকার কতটা সফল তা সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। শিক্ষক নিয়োগে নিয়োগ বাণিজ্যের অবসান ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার পরিবেশ নিষ্কণ্টক করতে সরকারকে যত্নবান হতে হবে। সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে নানামুখী কল্যাণমূলক পদক্ষেপ নিয়েও শিক্ষা ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছা দুরূহ হয়ে দাঁড়াবে। আমরা আশা করব, নিজেদের সুনামের স্বার্থেই শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর