শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

যথেচ্ছতা ঠেকাতে হবে

শিক্ষা আর ব্যবসাকে এক গোত্রে ফেলার সুযোগ থাকা উচিত নয়। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ উদ্যোক্তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নির্ভেজাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করার যে কসরত চালাচ্ছেন তাতে সেগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মর্যাদা হারাতে চলেছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় ব্যবসায়িক নৈতিকতার ওপর ভিত্তি করে। সে নৈতিকতার অভাবে অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লুটেরা চরিত্রই অর্জন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রতিবেদনেও এসব প্রতিষ্ঠানের যাচ্ছেতাই অবস্থার চালচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যা দূর করতে বছরে অন্তত একবার সভার আয়োজন করবে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়ন, হিসাব-নিকাশ অনুমোদন, বাজেট অনুমোদনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পালন করে। কিন্তু বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কমিটি এক বছরে একবারও বৈঠক করেনি। এ ছাড়া একাডেমিক কাউন্সিল, অর্থ কমিটিসহ আরও বেশ কয়েকটি কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়নি অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, এসব বৈঠক না করার ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন লঙ্ঘন করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শিক্ষাবিদদের মতে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরেও গুরুত্বপূর্ণ এসব কমিটির বৈঠক হয় না, তাদের লেখাপড়া নয়, ব্যবসাই মূল উদ্দেশ্য। উচ্চশিক্ষা বিস্তারের মহৎ লক্ষ্যে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আলু, পিয়াজ, পটোল ও মাছের দোকান খোলার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার অনুমতি দিয়ে কার্যত উচ্চশিক্ষার বারোটা বাজানো হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি বাদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হয়ে উঠেছে শিক্ষিত বেকার বানানোর প্রতিষ্ঠান। দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিতেও ব্যর্থ হচ্ছেন শিক্ষা ব্যবসায়ীরা। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই এদিকে সরকারের নজর পড়বে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর