রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

পণ্য খালাসের জটিলতা

সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ নিন

চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস বিলম্ব হওয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ঝুঁকির মুখে পড়ছে বাংলাদেশ। সময়মতো পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের ক্রেতারা অন্যদিকে ঝুঁকছে। এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছেন পোশাকশিল্প-সংশ্লিষ্টরা। এতে খরচ কমানোর স্বার্থে পাকিস্তানি কাপড়ের শতভাগ কায়িক পরীক্ষা না করে স্ক্যানারের মাধ্যমে যাচাই করে পণ্য খালাসের প্রস্তাব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ক্রেতারা চাচ্ছেন পাকিস্তানি কাপড়ের পণ্য। কিন্তু এ কাপড় আনতে গিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। ১৫ দিন থেকে দুই মাস পর্যন্ত সময় লাগছে। ফলে ক্রেতারা পাকিস্তানে চলে যাচ্ছে। পরিণতিতে তৈরি পোশাকের বাজার হারাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া পোশাকশিল্পের কাঁচামাল ছাড়করণে শতভাগ কায়িক পরীক্ষাসহ রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। পাকিস্তানি মুদ্রা অবমূল্যায়নের কারণে ডেনিম ও টুইল কাপড় উৎপাদনে তারা অনেক এগিয়ে রয়েছে। অন্য দেশের তুলনায় পাকিস্তানে স্বল্পমূল্যে কাপড় কেনা সম্ভব হচ্ছে। তাই অনেক বিদেশি ক্রেতা পাকিস্তানি কাপড় দিয়ে পোশাক তৈরির রপ্তানি আদেশ দিচ্ছে। দেশের রপ্তানির স্বার্থে সময় ও খরচ কমানো এবং দ্রুততার সঙ্গে পাকিস্তান থেকে আমদানির জন্য পণ্য চালান খালাসের লক্ষ্যে শতভাগ কায়িক পরীক্ষার বদলে স্ক্যানারের মাধ্যমে যাচাই করে পণ্য ছাড়করণের অনুমোদন প্রদানের দাবি যে কারণে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। গার্মেন্ট মালিকদের প্রস্তাবে তৈরি পোশাকশিল্পের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত ও আধুনিক বন্ডেড ওয়্যারহাউস স্থাপনের লক্ষ্যে রাসকিং সিস্টেম প্রযুক্তি শুল্কমুক্ত রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। তৈরি পোশাকের কাঁচামাল দ্রুত ছাড়করণই শুধু নয়, আমদানিকৃত যে কোনো পণ্য দ্রুত ছাড়করণে দেশের বন্দরগুলোর দক্ষতা বাড়ানো উচিত। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে দ্রুত পণ্য জাহাজিকরণ এবং খালাসের ওপর ব্যবসায়ীদের লাভ-লোকসানই শুধু নয়, জাতীয় স্বার্থও জড়িত থাকে। দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্য খালাসে সময় ক্ষেপণ হয় এবং এজন্য বাড়তি জাহাজ ভাড়া গুনতে হয় আমদানিকারকদের। একইভাবে সময়মতো পণ্য জাহাজে ওঠাতে ব্যর্থ হলে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে রপ্তানিকারকদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সরকার তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য বিদেশ থেকে বিনা শুল্কে কাপড় আমদানির সুযোগ দিচ্ছে। এ কাপড় সময়মতো গার্মেন্ট মালিকদের হাতে পৌঁছানোর বিষয়টিও সমভাবে জরুরি। সে বিবেচনায় তৈরি পোশাক মালিকদের প্রস্তাবগুলো সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত বলেই আমরা মনে করি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর