মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

পোলট্রি শিল্পের সংকট

দ্রুত নিরসনের উদ্যোগ নিন

পোলট্রি শিল্পের সংকট দেশের ৬০ হাজার খামারিকে বিপাকে ফেলেছে। হুমকির মুখে পড়েছে এ খাতে বিনিয়োগ করা ৩৫ হাজার কোটি টাকার পুঁজি। পোলট্রি ফুডের দাম বাড়ছে হু হু করে, এর বিপরীতে কমছে বয়লার মুরগির দাম। ৭০ টাকার বাচ্চা মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। যে দামে উৎপাদন খরচও উঠছে না। ফলে খামারিদের পক্ষে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। চাহিদার তুলনায় দেশে মাংসের উৎপাদন বেড়ে যাওয়াও সংকটের জন্য অনেকাংশে দায়ী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসসহ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বলছে, জনসংখ্যা অনুপাতে বার্ষিক মাংসের চাহিদা ৭২ দশমিক ১৪ লাখ টন, কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে ৭২ দশমিক ৬০ লাখ টন। মাংস উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতাই শুধু নয়, বরং চাহিদার চেয়েও শূন্য দশমিক ৪৬ লাখ মেট্রিক টন বেশি উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের তথ্যমতে, পোলট্রি শিল্পে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ২৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। পরোক্ষভাবে আরও প্রায় ৩৫-৪০ লাখ মানুষ এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। সরকার ২০২১ সাল নাগাদ জনপ্রতি বার্ষিক ডিম খাওয়ার গড় পরিমাণ ১০৪টিতে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০২১ সাল নাগাদ দৈনিক প্রায় সাড়ে ৪ কোটি ডিম এবং দৈনিক প্রায় ৩ দশমিক ৫ থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন মুরগির মাংস উৎপাদনের প্রয়োজন হবে। বিনিয়োগ লাগবে ৫০-৬০ হাজার কোটি টাকা। নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত করতে সামগ্রিকভাবে পোলট্রি খাতে আরও বেশি আধুনিকায়ন ও মানোন্নয়নের প্রয়োজন হবে। এ প্রেক্ষাপটে জরুরি ভিত্তিতে পোলট্রি শিল্পের সংকট মোচনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। পোলট্রি শিল্প রক্ষায় হাঁস-মুরগির খাবার তৈরির উপাদানের দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। পোলট্রি শিল্পের জন্য বীমাব্যবস্থা প্রবর্তন ও কাঁচামাল আমদানি সহজীকরণের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। পোলট্রি শিল্প দেশের মানুষের আমিষ চাহিদা পূরণ করছে। পুষ্টি জোগানের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালনের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে। এ প্রেক্ষাপটে এ শিল্পের সুরক্ষায় সরকারকে যত্নবান হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর