মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দীনের দাওয়াত দেয় তাবলিগ জামাত

মুহম্মাদ আশরাফ আলী

‘তাবলিগ’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ ‘পৌঁছানো’। ইসলামের শাশ্বত বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াকে তাবলিগ বলে। রব্বুল আলামিন মানুষ সৃষ্টির পর পৃথিবীতে লক্ষাধিক পয়গম্বর পাঠিয়েছেন। তাঁদের সবাই একাত্মবাদের তাবলিগ করেছেন। সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পৃথিবীতে আগমন করে শান্তি, কল্যাণ ও একাত্মবাদের প্রচার করেছেন। বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছেন ইসলামের মর্মবাণী; যার ফলে আইয়ামে জাহেলিয়ার অবসান ঘটেছিল। বিদায় হজের ভাষণে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমার পর আর কোনো নবী আসবে না। অতএব আমার একটি বাণী হলেও অন্যের কাছে পৌঁছে দাও।’ তাঁর এ নির্দেশ পালনে নিবেদিতপ্রাণ তাবলিগ জামাত। আল্লাহ ও রসুলের নির্দেশিত পথে জীবন গড়ার দাওয়াত দেওয়াকে কর্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছে এ জামাত। তাবলিগ জামাতের ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে আগামী শুক্রবার শুরু হবে।  মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার পুরোটা সময় কাটাবেন আল্লাহর ইবাদতে। তাবলিগের মুরব্বিদের কাছ থেকে তারা আল্লাহর পথে কীভাবে চলবেন সে প্রশিক্ষণ নেবেন। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত শুধু নয়, মানবসেবার দীক্ষাও পাবেন তাদের কাছ থেকে। পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র জীবনযাপনের সবক নেবেন তারা। আল্লাহ ও আল্লাহর রসুলের পথ আঁকড়ে ধরার জন্য তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবেন। তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার যে দাওয়াতি কার্যক্রম শুরু করেন তা আজ বিশ্বজুড়ে মুমিনদের মহাআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আল্লাহর প্রতি নিরঙ্কুশ আনুগত্যের মাধ্যমে নিজের জানমালকে মহান স্রষ্টার প্রতি উৎসর্গ করার তাগিদ সৃষ্টি করেছে তাবলিগ জামাতের শিক্ষা। সূরা আস সাফের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহপ্রেমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের কি এমন একটি ব্যবসার সন্ধান দেব যা তোমাদের কঠোর আজাব থেকে রক্ষা করবে? তা হলো আল্লাহর ও তাঁর রসুলের ওপর ইমান আনবে, আল্লাহর রাস্তায় জানমাল দিয়ে মেহনত করবে।’ তাবলিগ জামাতের নিবেদিতপ্রাণ আল্লাহপ্রেমিকরা সূরা আস সাফের নির্দেশনা অনুযায়ী আল্লাহর পথে মেহনত করাকে নিজেদের কর্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন। হানাহানি ও পঙ্কিলতামুক্ত শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠায় তারা একে অন্যের প্রতি মহব্বতের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আল্লাহ ও রসুলের নির্দেশিত পথ আঁকড়ে ধরতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছেন। বস্তুগত স্বার্থ ও লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে নিজেদের সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছেন। বিশ্বজুড়েই যার প্রয়োজন আজ সবচেয়ে বেশি।

সর্বশেষ খবর