শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশ্ব ইজতেমা

দৃঢ়তর হোক বিশ্বাসীদের ঐক্য

কহর দরিয়া তুরাগ তীরে আজ থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা। ইতিমধ্যে লাখ লাখ মুসল্লির উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠেছে ইজতেমা প্রাঙ্গণ। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম উম্মাহর দাওয়াতি কার্যক্রমের শীর্ষ মিলনমেলা হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে শিল্পনগরী টঙ্গী সেজেছে নতুন সাজে। তুরাগ পাড়ে ১৬০ একর এলাকাজুড়ে বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। তুরাগ নদের পূর্ব ও পশ্চিম তীরের বিস্তৃত ভূমিতে চটের তৈরি বিশাল শামিয়ানা ৯১টি খিত্তায় বিভক্ত করে বিভিন্ন জেলার মুসল্লিদের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। ময়দানের উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ১০ হাজার বিদেশি মেহমানের থাকার ব্যবস্থা রেখে নির্মাণ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক নিবাস। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের প্রতিবন্ধী মুসলিমদের জন্য পৃথক নিবাস তৈরি করা হয়েছে। আগত বিদেশি মেহমানদের সব ধরনের সেবাদানের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের যাতায়াত সহজতর করতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদের ওপর সাতটি ভাসমান পন্টুন সেতু নির্মাণ করেছেন। মুসল্লিদের সুষ্ঠুভাবে মুরব্বিদের বয়ান শোনার জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক মাইক স্থাপন করা হয়েছে। ইজতেমার নিরাপত্তা রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নিñিদ্র ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব ও সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার হাজার হাজার সদস্য নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। এ জন্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম জাহানে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। এ দেশের মানুষ যে সত্যিকার অর্থেই ধর্মভীরু বিশ্ব ইজতেমার মাধ্যমে তা প্রকাশ পেয়েছে। মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি সুসংহতকরণেও বিশ্ব ইজতেমার অবদান অনস্বীকার্য। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, তাবলিগ জামাতের মধ্যে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে, তার অপপ্রভাবে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছিল। দুই পক্ষ বিরোধকে পাশ কাটিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানে সমঝোতায় উপনীত হয়েছেন। আজ থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের ইজতেমা। ১৭ জানুয়ারি থেকে তিন দিনের ইজতেমা করবেন সাদপন্থিরা। আমরা আশা করব, তাবলিগ জামাতের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে বিশ্ব ইজতেমাকালে দুই পক্ষই সাংঘর্ষিক বক্তব্য থেকে বিরত থাকবে। তাবলিগ জামাতের মর্যাদার স্বার্র্থে আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের মতবিরোধের ইতি ঘটানোর পথ খোলা রাখা হবে এমনটিও প্রত্যাশিত। বিশ্ব ইজতেমায় যেসব মুসল্লি অংশ নিয়েছেন, আমরা তাদের প্রতি মোবারকবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ তাদের সুস্থ রাখুন, এমনটিও কাম্য। সফল হোক বিশ্ব ইজতেমা। দৃঢ়তর হোক বিশ্বাসী মানুষের ঐক্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর