শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

যুদ্ধ নয় শান্তি

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের সুমতি কাম্য

মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় সামরিক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা এবং প্রতিশোধ হিসেবে পাল্টা হামলায় ইরাকে দুটি মার্কিন ঘাঁটি বিধ্বস্ত করেছে ইরান। হামলা ও পাল্টা হামলাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগর এলাকাজুড়ে যুদ্ধের আশঙ্কা যখন বিশ্ববাসীকে সন্ত্রস্ত করে তুলছিল তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর স্বভাবসিদ্ধ উগ্রতা থেকে সরে এসে সমঝোতার প্রতি আগ্রহের কথা বলেছেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন, দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনো মার্কিন নাগরিক যেহেতু  হতাহত হয়নি সেহেতু তিনি পাল্টা ব্যবস্থা নেবেন না। ইরান কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছে এমন দাবিও করেছে ট্রাম্প। বলেছেন তারা ইরানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎই চান। যারা শান্তি চায় তাদের সঙ্গে হাত মেলাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুনিয়াজুড়ে যে উগ্র ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে তার সঙ্গে ট্রাম্পের সর্বশেষ প্রতিক্রিয়ার মিল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ট্রাম্প তাঁর ইরানবিষয়ক কট্টর নীতি পাল্টাবেন এমন আশা করা নিঃসন্দেহে ঝুঁকিপূর্ণ। তার পরও বলা যায়, ট্রাম্পের প্রস্তাব ইরানের জন্য সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। যতই যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেখাক না কেন, ইরান তার নিজের শক্তি ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অজ্ঞ নয়। দীর্ঘদিনের মার্কিন অবরোধে ইরানের অর্থনীতি ফোকলা হয়ে উঠেছে। দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ দূরের কথা, স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধেও নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখা দুষ্কর হয়ে পড়বে ইরানের পক্ষে। এখনই উভয় পক্ষ নিজেদের সামাল না দিলে ভয়াবহ বিপদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি। সংঘাত এড়াতে তারা দায়িত্বশীল হবে, এমনটিই দেখতে চায় বিশ্ববাসী। অন্যদিকে ইরান বিশ্বাঙ্গনে কার্যত নিঃসঙ্গ দেশ। এমনকি মুসলিম দেশগুলোও তাদের পাশে নেই। উপসাগর থেকে বহু দূরে থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সংঘাতে ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ সব তেল আমদানিকারক দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে। স্বাভাবতই দুই পক্ষ সুমতির পরিচয় দেবেÑ এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর