বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

আল্লাহ চান বান্দা তাঁর কাছে আবেদন নিবেদন করুক

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

আল্লাহ চান বান্দা তাঁর কাছে আবেদন নিবেদন করুক

আল্লাহ অসীম দয়ালু। তাঁর দয়ার শেষ নেই। তাঁর ভান্ডারও অফুরন্ত। যে কারণে আল্লাহ চান বান্দা তাঁর কাছে  সব সময় করুণা প্রার্থনা করুক। সব সময় তাঁকে স্মরণ করুক। আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে উত্তম কোনো আমল নেই। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘দোয়াই হলো ইবাদত।’ তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজা। আমলের দিক থেকেও দোয়া হলো শ্রেষ্ঠতর। তিরমিজিতে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে উত্তম কোনো আমল নেই।’ দয়ালু আল্লাহ চান বান্দা সব সময় তাঁর কাছে আবেদন-নিবেদন করুক। আল্লাহ বান্দার দোয়া মঞ্জুর করতে সর্বদাই প্রস্তুত। তবে দোয়া করার সময় দোয়ার আদবগুলো যাতে পালিত হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। দয়ালু আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হলে খাস মনে করতে হবে। যিনি দোয়া করবেন তাকে হালাল আয়ের অধিকারী হতে হবে। যারা হারাম আয়ের ওপর নির্ভরশীল, যারা হারাম আয় করেন তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল নাও করতে পারেন। আল্লাহর অনুগ্রহ চাইতে হলে আগে নিজেদের শুদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ বলছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ আল কোরআন। তবে আল্লাহকে ডাকার ক্ষেত্রে তিনি যাতে সন্তুষ্ট হন তা নিশ্চিত হতে হবে। মনে রাখতে হবে, হারাম পানাহার দোয়া কবুলের অন্তরায়। এ ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘এমন এক ব্যক্তি যে দীর্ঘ সফরে পদযুগল করেছে ধুলায় ধূসরিত। অতঃপর আকাশের দিকে হাত তুলে দোয়া করে, হে প্রভু! হে প্রভু!! কিন্তু তার খাদ্যও হারাম, পানীয়ও হারাম। এমন ব্যক্তির দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ মুসলিম। হারাম বা অবৈধ পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত পোশাক পরিধান করা অবস্থায় দোয়া করলে সে দোয়া কবুল হয় না। হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘কোনো এক ব্যক্তি চার দিরহাম দ্বারা একটি কাপড় কিনল। এর মধ্যে যদি মাত্র এক দিরহাম হারাম থাকে, এমন কাপড় পরিধান করে নামাজ পড়লে তার নামাজ কবুল হবে না।’ সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ না করলে তার দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজে বাধা প্রদান করবে। অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের প্রতি আজাব নাজিল করবেন। অতঃপর তোমরা দোয়া করবে কিন্তু তোমাদের দোয়া কবুল করবেন না।’ দোয়ায় অমনোযোগী হলে অর্থাৎ দোয়াকারী দোয়া অবস্থায় উদাস বা অমনোযোগী থাকলে তার দোয়া কবুল হয় না। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ইরশাদ করেন, ‘দোয়া কবুল হবে এমন দৃঢ়বিশ্বাস রেখে তোমরা দোয়া করবে। আর জেনে রেখো, আল্লাহ কোনো উদাস অমনোযোগী অন্তরের দোয়া কবুল করেন না।’ তিরমিজি, হাকিম। তাড়াহুড়া করলে দোয়ার সুফল মিলবে না। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘দোয়া করার পর কবুল হওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করলে সে দোয়া কবুল হয় না।’ মুসলিম।

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর