বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজধানীর বায়ুদূষণ

হাই কোর্টের ৯ নির্দেশনা অভিনন্দনযোগ্য

বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকা এখন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নগরী। যানজটের নগরী, বাসবাসের অযোগ্য নগরী হিসেবে রাজধানী ঢাকার অভিধা পুরনো হয়ে গেছে বায়ুদূষণের কারণে। কর্তাব্যক্তিদের দায়দায়িত্বহীনতায় ঢাকার বায়ুদূষণ দেড় কোটির বেশি মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশার কথা, এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট রাজধানীর বাতাস দূষিত হওয়ার কারণ কী এবং তা রোধে পরিবেশ অধিদফতর কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে যেসব পরিবহন নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি কালো ধোঁয়া ছড়াচ্ছে, সেসব যানবাহন জব্দ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনাও দিয়েছে। ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে সুপারিশসংবলিত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদন হাই কোর্টে উপস্থাপনের পর এ আদেশ দেওয়া হয়। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা ওই এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টের দেওয়া ৯ দফা নির্দেশনায় সড়ক পরিবহন আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবহনের ‘ইকোনমিক লাইফ’ নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। যেসব পরিবহনের ইকোনমিক লাইফের মেয়াদ শেষ হয়েছে, সেসব পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়া চলমান টায়ার পোড়ানো ও ব্যাটারি রিসাইক্লিং বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশ বাস্তবায়ন করে পরিবেশ অধিদফতরকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে এক মাসের মধ্যে। ঢাকার পাশের চার জেলায় যেসব অবৈধ ইটভাটা এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদনও দিতে হবে। এ ছাড়া ঢাকায় বালু, ময়লা, বর্জ্য বহনের সময় বহনকারী ট্রাকসহ সংশ্লিষ্ট যানবাহনকে ঢেকে চলাচল করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও ধূলিপ্রবণ এলাকায় পানি ছিটানোর কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়। বায়ুদূষণ রোধে হাই কোর্টের নির্দেশনা অভিনন্দনযোগ্য। এগুলো কার্যকর হলে রাজধানীবাসী এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে। এ নির্দেশনা পালনে সংশ্লিষ্ট সবাই যাতে বাধ্য হয়, তা নিশ্চিত করতে শুধু পরিবেশ অধিদফতর নয়, পুরো প্রশাসনের চোখ ও কান খোলা রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর