বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

শেয়ারবাজারে ধস

লুটেরাদের শক্ত হাতে ধরুন

শেয়ালের কাছে মুরগি পুষতে দিলে যা হয়, তেমনই ঘটছে শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে। বিনিয়োগকারীরা আস্থা রাখতে পারছেন না শেয়ারবাজারের ওপর। মোদ্দা কথায়, বাজার কর্তৃপক্ষের ওপর তাদের কোনো আস্থাই নেই। ফলে ধস নামা শুধু নয়, ক্রেতাসংকটে ধারাবাহিক দরপতন অনিবার্য হয়ে উঠছে। বলা যায়, দেশের শেয়ারবাজার এখন মাটিতে শুয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই শেয়ারের দর নামছে নিচের দিকে। কেউ কোনো দিশা দিতে পারছেন না। ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে কর্তৃপক্ষ উদাসীন শুধু নয়, নির্বিকার ভূমিকায় ভুগছে। গত মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ৮৭ কমে ৪ হাজার ৩৬ পয়েন্টে নেমেছে। ২০১৩ সালে চালু করা সূচকটির ভিত্তি পয়েন্টের নিচে অবস্থান করছে। চলতি সপ্তাহের তিন দিনের লেনদেনে সূচক কমেছে ১৮৬ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক কমেছে ২৭৪ পয়েন্ট। বাজারের এই চরম দৈন্যদশায় আতঙ্কিত ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা মতিঝিলে ডিএসইর সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেছেন। এদিকে বাজারের তারল্য-সংকট কাটাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারের সংকট নিরসনে ২০ জানুয়ারি স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন অর্থমন্ত্রী। দিলকুশায় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কার্যালয়ে এ বৈঠক হওয়ার কথা। এর আগে ২ জানুয়ারি ডিএসই পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পরও কোনো উন্নতি দেখা যায়নি শেয়ারবাজারে। শেয়ারবাজারের ধারাবাহিক পতন দেশের লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে পথে বসিয়েছে। এর বিপরীতে লুটেরা ও মতলববাজ চক্রের পকেট স্ফীত করেছে অবিশ্বাস্যভাবে। এই র‌্যাট রেস দেশের সাধারণ মানুষের কাছে প্রশাসনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে এক দশকের বেশি সময় ধরে। বিরোধী দলহীন বাংলাদেশে নিকট ভবিষ্যতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাহানির কোনো আশঙ্কাই নেই। কিন্তু শেয়ারবাজার ঘিরে বিভীষণরা দাবার চাল চালছে। লাখ লাখ বিনিয়োগকারীই শুধু নয়, তাদের স্বজনরাও হতাশ হয়ে পড়ছেন। এ অবস্থা মোকাবিলায় সরকারকে ধূর্ত শেয়ালদের পাকড়াওয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। নিজেদের স্বার্থেই লুটেরাদের শক্ত হাতে ধরতে হবে। এখনই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর