বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢাবির ভর্তি জালিয়াতি

কর্তৃপক্ষের কড়া ভূমিকা অভিনন্দনযোগ্য

ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ভর্তি জালিয়াতির ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির জন্য বিড়ম্বনা ডেকে এনেছিল। এ অপকর্মের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে কর্তৃপক্ষ আরও ৬৩ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পর্ষদ দুর্বিনীত ওইসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ভর্তি জালিয়াতির হোতাদের পাশাপাশি অস্ত্র ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে আরও চারজনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ফোরাম সিন্ডিকেট এসব শিক্ষার্থীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পর্ষদের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছিনতাইয়ের অভিযোগে ১৩ শিক্ষার্থীকে সাময়িক ও সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় আরও দুজনকে ছয় মাস করে বহিষ্কার করা হয়। সাময়িক বহিষ্কৃত ১৩ জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জালিয়াতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গত ২৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। ৮৭ জনের মধ্যে ১৫ জনকে ওই বছরই স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। বাকি ৭২ জনের মধ্যে ৬৩ জন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হতে যাচ্ছেন। অবশিষ্ট নয়জনকে সাময়িক বহিষ্কার করে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করেছে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ভর্তি জালিয়াতির ঘটনা। যারা এ অপকর্মে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির সিদ্ধান্ত খুবই যৌক্তিক ও অভিনন্দনযোগ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইনে কর্তৃপক্ষীয় এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ নেই। আমাদের বিশ্বাস, কর্তৃপক্ষীয় এ কড়া ব্যবস্থা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও অবদান রাখবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একসময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে অভিহিত করা হতো। দেশবাসীর কাছে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মর্যাদা ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু গত দুই যুগে শিক্ষকদের একাংশের দলীয় রাজনীতির লেজুড়বৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাকে পথে নামিয়েছে। ভর্তি জালিয়াতি ও রাজনৈতিক দলের লেজুড় ছাত্র সংগঠনগুলোর দখলবাজিও সুনাম নষ্টের জন্য দায়ী। আশা করা যায়, সুনাম পুনর্গঠনে কর্তৃপক্ষ আরও সচেতন হবে; যা তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর