শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কৃষিজমি সুরক্ষার উদ্যোগ

যেখানে সেখানে শিল্প স্থাপন বন্ধ হোক

অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে শিল্প স্থাপনে উদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করতে চাচ্ছে সরকার। যেখানে সেখানে শিল্প স্থাপন করে যাতে পরিবেশ দূষণ ও কৃষিজমির অপচয় না ঘটে তা নিশ্চিত করতে সরকার এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। স্মর্তব্য, বাংলাদেশে কৃষিজমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমছে। গত চার যুগে একদিকে জনসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণের অনেক বেশি অন্যদিকে কৃষিজমি কমেছে অন্তত ৩০ ভাগ। আধুনিক চাষাবাদের কারণে খাদ্য উৎপাদন তিন গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিজমি হ্রাসের কুফল এখনো ভয়াবহভাবে অনুভূত হচ্ছে না। কিন্তু জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে অচিরেই এ ক্ষেত্রে সংকট দেখা দেবে। এ বিপদ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে কোনো শিল্পকারখানা করলে তাতে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না। এমন ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে সরকারের অন্যান্য পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হবে। কৃষিজমি নষ্ট করে যেখানে সেখানে শিল্প স্থাপন বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। গত ২০ আগস্ট ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’-এর মাস্টারপ্ল্যান উপস্থাপনের সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সভায় দেশের যেখানে সেখানে অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করতে ক্রমান্বয়ে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ সরকারের অন্যান্য পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন। কৃষিজমি নষ্ট করে অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা গড়ে তোলায় একদিকে যেমন খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি শিল্পকারখানার বর্জ্যে পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা ও নিরাপত্তা বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে কৃষিজমি সুরক্ষার বিষয়টি অনেকাংশে নিশ্চিত হবে। কৃষিজমি সুরক্ষায় শুধু শিল্পকারখানা নয়, সব ধরনের স্থাপনার ক্ষেত্রেও বিশেষ অনুমতি নেওয়ার বিধান থাকা উচিত। গ্রামাঞ্চলে কৃষিজমি সুরক্ষায় বহুতল বাড়ি নির্মাণের বিষয়ে উৎসাহ দেওয়ার কথা ভাবতে হবে।

সর্বশেষ খবর