সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দাওয়াতি কার্যক্রম রসুলুল্লাহর সুন্নাত

আবদুর রশিদ

পথভ্রষ্ট মানবজাতিকে পরকালে পুরস্কৃত হওয়ার পথের দিশা দিতে যুগে যুগে আল্লাহর মনোনীত নবী-রসুলরা দাওয়াত, তাবলিগ ও দীনি শিক্ষা দিতে পৃথিবীতে এসেছেন। হজরত আদম (আ.) থেকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত ছিল। তার পর থেকে তাঁর অনুসারীরা এ দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। লাখ লাখ মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরলস প্রয়াস রাখছে তাবলিগ জামাত। মহান আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পথ আঁকড়ে ধরার ক্ষেত্রেও তাবলিগের বিশ্ব ইজতেমার ভূমিকা অনুপ্রেরণাদায়ক। মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) আজ থেকে নয় দশক আগে অবিভক্ত ভারতের জনবিরল এলাকা মেওয়াতে মাত্র কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে তাবলিগ জামাতের মেহনত শুরু করেন। আল্লাহ তাঁর এ মেহনত কবুল করেছেন বিধায় তাবলিগের আলো সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি বছর টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমায় লাখ লাখ মুসল্লির সমাবেশ প্রমাণ করছে, তাবলিগের আহ্বান মুমিনদের অন্তরকে স্পর্শ করতে সমর্থ হয়েছে। আল কোরআনের সূরা নাহলের ১২৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান কর হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে বিতর্ক করবে উত্তম পন্থায়।’ মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) দাওয়াতের কাজে মেওয়াতবাসীকে সংগঠিত করেন। তাদের জামাতবদ্ধ করে ধারেকাছের সব জনপদে পাঠাতে শুরু করেন। ১৯৪১ সালে মেওয়াতের নুহ এলাকায় ইজতেমার আয়োজন করা হয়। আল্লাহর রহমতে তাবলিগ জামাতের প্রথম ইজতেমা বিশাল আকার লাভ করে। এর তিন বছর পর ১৯৪৪ সালে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের যাত্রা হয়। দুই বছর পর কাকরাইলের মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমা। ’৬৫ সালে টঙ্গীর পাগারে এবং পরের বছর টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে এ পর্যন্ত এখানে বিশ্ব ইজতেমা প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দারুল উলুম দেওবন্দের মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রতি ইমান আনা, ঐক্যবদ্ধভাবে দীনের কাজ করা এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার যে দাওয়াত শুরু করেন, তার আলো আজ এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীকে তারা কাছের ও দূরের সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াকে নিজেদের কর্তব্য বলে বেছে নিয়েছেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমার পর আর কোনো পয়গম্বর আসবে না, অতএব আমার একটি বাণী হলেও অন্যের কাছে পৌঁছে দাও।’ এ নির্দেশনা মনেপ্রাণে বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। তীব্র শীত উপেক্ষা করে দেশ-বিদেশের যে লাখ লাখ মুসল্লি বিশ্ব ইজতেমায় উপস্থিত হচ্ছেন, তাঁদের সবার প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। তাঁদের মেহনত আল্লাহ কবুল করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর