শিরোনাম
বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ইতিহাস

পাট্টা প্রথার প্রবর্তক

পাট্টা প্রথার প্রবর্তক

সম্রাট শেরশাহ ছিলেন যোগ্য শাসক। তিনিই ভারতবর্ষে সর্বপ্রথম ‘পাট্টা’ (ভূমিস্বত্বের দলিল) ও ‘কবুলিয়াত’ (চুক্তি দলিল) প্রথা চালু করে জমির ওপর প্রজার (রায়তের) মালিকানা সুনিশ্চিত ও কৃষিকার্যে উৎসাহদানের জন্য কৃষককে ঋণদানের ব্যবস্থা করেন। শেরশাহ মুদ্রাব্যবস্থার সংস্কার সাধন ও হয়রানিমূলক কর রহিত করে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি বিধান করেন। সাম্রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার সঙ্গে রাজধানী আগ্রার চমৎকার সংযোগ-সড়ক নির্মাণ এবং এ সড়কের ধারে নির্দিষ্ট দূরত্বে সরাইখানা, মসজিদ ও মন্দির প্রতিষ্ঠা করে তিনি যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি সাধন করেন। তাঁর নির্মিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ছিল সড়ক-ই-আজম (মহাসড়ক)। ৩ হাজার মাইল দীর্ঘ এ মহাসড়ক সোনারগাঁ থেকে আগ্রা, দিল্লি ও লাহোর হয়ে মুলতান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং এর দুই পাশে ছিল ছায়াদানকারী বৃক্ষশ্রেণি। ঔপনিবেশিক আমলে এ সড়ক গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড নামে পরিচিতি লাভ করে। রাজধানী থেকে সাম্রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং বাইরে থেকে রাজধানীতে সহজে ও দ্রুত সরকারি নির্দেশ ও সংবাদ আদান -প্রদানের জন্য যাত্রাপথে পর্যায়ক্রমে সংবাদ-বাহকের ঘোড়া বদল করার এক অভিনব পদ্ধতি তিনি চালু করেন। পথের পাশের সরাইখানাগুলো সংবাদবাহী ঘোড়া বদলের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সুলতান পুলিশব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস করেন। গ্রামপ্রধানদের তিনি দায়িত্ব দেন স্ব স্ব এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বিধানের এবং মুহতাসিবদের সহায়তায় মদ্যপান ও ব্যভিচারের মতো অপরাধ দমন করেন। তিনি একটি শক্তিশালী স্থায়ী সেনাবাহিনী ও দক্ষ গুপ্তচর দল পোষণ করতেন। ন্যায়বিচারের প্রতি ছিল তাঁর প্রবল অনুরাগ। সুলতান ছিলেন দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় মামলায় সর্বোচ্চ বিচারক। তাঁর পরবর্তী অধস্তন বিচারক ছিলেন কাজি-উল-কুজ্জাত। পরগনাগুলোয় কাজি ফৌজদারি মামলার বিচার করতেন, আর দেওয়ানি মামলার বিচারক ছিলেন আমিন। হিন্দুদের দেওয়ানি মামলার বিচার করতেন পঞ্চায়েতরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর