বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বুড়িগঙ্গা সুরক্ষা

অবৈধ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ প্রশংসার দাবিদার

বুড়িগঙ্গা নদী দূষণের সঙ্গে জড়িত ও পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং বর্জ্য শোধনাগার ছাড়া পরিচালিত ২৩১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান অবিলম্বে পরিবেশ অধিদফতরকে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। হাই কোর্টের নির্দেশনায় একই সঙ্গে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের চিঠি পাওয়ার পর ওইসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস ও ডিপিডিসিকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঢাকার জেলা প্রশাসক, ডিএমপি কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে সহযোগিতা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ আদেশ বাস্তবায়ন সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরিবেশ অধিদফতরের মাধ্যমে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের ওপর শুনানির ধারাবাহিকতায় ওই আদেশ দেয় আদালত। পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই ২৩১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু থাকার বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিবেদন দাখিলের পর তার ভিত্তিতে আদালত আদেশ দেয়। আদালতের আদেশে পরিবেশ অধিদফতরের দাখিল করা ২৩১টি প্রতিষ্ঠানের বাইরে এ ধরনের আর যদি কোনো প্রতিষ্ঠান থাকে, তাও চিহ্নিত করে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুড়িগঙ্গা রাজধানীর প্রধান নদী। এ নদীর দূষণ মানেই রাজধানীর পরিবেশ দূষণ। নদীদূষণ মানেই দেড় কোটি মানুষের আবাসস্থল ঢাকা মহানগরীকে মানুষের বসবাসের অযোগ্য করে তোলা। ৪০০ বছর আগে ঢাকা সুবে বাংলার রাজধানীর মর্যাদা পেয়েছিল বুড়িগঙ্গার কারণেই। ঢাকাকে রাজধানী করার পেছনে এ নদীর অবস্থানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। পরে ঢাকার আয়তন বেড়েছে। আরও তিনটি নদ-নদী রাজধানীর অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব জলাশয় রাজধানীর ফুসফুস হিসেবে ভূমিকা পালন করলেও একশ্রেণির লোভী মানুষের কা-জ্ঞানহীন আচরণে ঢাকা ক্রমান্বয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বুড়িগঙ্গাসহ রাজধানীর নদ-নদী জলাশয়-দূষণমুক্ত করার ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশনা ধন্বন্তরি ভূমিকা পালন করবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর