শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজস্ব আয়ে বিসংবাদ

মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিন

সরকারের রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়ার জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে মামলাবাজদের অপতৎপরতা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ে কাক্সিক্ষত সাফল্যের মুখ দেখছে না রাজস্ব প্রদানকারীদের কেউ কেউ মামলার আশ্রয় নেওয়ায়। এ মুহূর্তে দেশের উচ্চ আদালত ও রাজস্ব-সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালগুলোয় ঝুলে আছে ২২ হাজারের বেশি মামলা। আয়কর, ভ্যাট ও আমদানি শুল্কের ওইসব মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় সরকারের পক্ষে ৩২ হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না। ঐতিহ্যগতভাবে বিরাজমান বিচার বিভাগের দীর্ঘসূত্রতা কাজে লাগিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আটকে রেখেছে স্বার্থান্বেষী মহল। মামলাকে তারা রাজস্ব আটকানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। শুধু বড় শিল্প গ্রুপ বা প্রতিষ্ঠানই নয়; ছোটবড় সব ধরনের ব্যবসায়ী ভ্যাট-ট্যাক্স-সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। বন্ড সুবিধার অপব্যবহারকারীরাও আদালতে মামলা করে আটকে রাখছেন হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব। আইনজ্ঞদের মতে, রাজস্ব-সংক্রান্ত মামলা বেশিদিন ঝুলে থাকলে সরকারের কোষাগারের ওপর নেতিবাচক চাপ পড়ে। রাজস্ব-সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির জন্য হাই কোর্টে একাধিক বেঞ্চ নির্ধারিত থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। রাজস্ব আদায় বাড়াতে হলে এ-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে হবে। স্মর্তব্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে ভ্যাট বা ট্যাক্স দাবি করলে তাতে আপত্তি থাকলে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আবেদন বা উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করা যায়। উচ্চ আদালত রিট আবেদন খারিজ করে এনবিআরে পাঠাতে পারে। সে ক্ষেত্রে এনবিআরের অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে হয়। এজন্য দাবিকৃত অর্থের ১০ শতাংশ পরিশোধ করতে হয়। অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজনীয় শুনানি শেষে রায় দেয়। এরপর বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ফের উচ্চ আদালতে আপিল করে। এভাবে গড়িয়ে যায় বছরের পর বছর। দেশ পরিচালনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে পর্যাপ্ত রাজস্ব আদায়ের বিকল্প নেই। রাজস্ব আদায়ের বাধা দূরীকরণে ট্রাইব্যুনাল ও বেঞ্চের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সঙ্গে এনবিআরের কাজের সমন্বয়ও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর