শিরোনাম
শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

মানবতার মুক্তি-দূত রসুলুল্লাহ

আবদুর রশিদ

বিশ্বমানবতার মু্িক্তদূত হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চারিত্রিক গুণাবলির প্রতিটি দিকই আমাদের জন্য অনুসরণীয়। আল কোরআনে তাঁর বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও প্রশংসনীয় গুণের কথা বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ বলছেন, ‘বাস্তবিকই আপনি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ সূরা আল কালাম, আয়াত ৪।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সত্যবাদী। তিনি সব সময় সত্য বলতেন। শিশুকাল থেকেই তাঁর মধ্যে এ অভ্যাস বিদ্যমান ছিল। সততার কারণে কুরাইশ ও সমগ্র আরব মহলে তিনি আল-আমিন বা সত্যাশ্রয়ী হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। তাঁর সততায় মুগ্ধ হয়ে ঘোর শত্রুরাও তাঁর কাছে ধনরত্ন গচ্ছিত রাখত। জীবনে কখনো তিনি সত্য থেকে বিচ্যুত হননি। আল্লাহ বলছেন, ‘তোমাদের সঙ্গে অবস্থানকারী এই রসুল পথভ্রষ্ট হননি এবং ভ্রান্তপথও অবলম্বন করেননি।’ সূরা নাজম, আয়াত ২।

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের সব ক্ষেত্রে ও সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রাখতেন। এমনকি বিপদের মুখোমুখি অবস্থায়ও এক মুহূর্তের জন্য আল্লাহকে ভুলতেন না। সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করতেন। ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তাঁকে বিপদ-বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। নির্যাতিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত হতে হয়েছে। কিন্তু এসব প্রতিকূল অবস্থায় তিনি আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভরসা রেখেছেন। বদর, উহুদ, খন্দক প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে জীবনের প্রতিটি দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে তিনি বিশ্বনিয়ন্তার কাছে হাত উঠিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন। হিজরতের সময় যখন সওর পর্বতের গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তখন তাঁর সঙ্গী হজরত আবু বকর (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের উভয়ের সঙ্গে আছেন।’ এ থেকেই বোঝা যায়, তিনি আল্লাহর প্রতি কতটা বিশ্বাস, কতটা ভরসাশীল ছিলেন। মুমিনদের জন্য যা সব ক্ষেত্রে অনুসরণীয়।

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সহিষ্ণুতা ও ধৈর্যশীলতায় মুগ্ধ হয়ে অনেকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। এমনই এক ঘটনা হাদিসে বর্ণিত আছে। একদা এক ইহুদির কাছ থেকে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধার করেছিলেন। সেই পাওনা আদায়ের সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই সে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করে। হজরত ওমর (রা.) তা দেখে সহ্য করতে না পেরে ইহুদিকে আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহুদির অন্যায় আচরণ মুখ বুজে সহ্য করেন এবং হজরত ওমর (রা.)-কে সামর্থ্য থাকলে তাঁর পাওনা আদায় করে মুক্ত করে দিতে বলেন। তাওরাত গ্রন্থে শেষ নবী অসীম ধৈর্যের অধিকারী হবেন বলে উল্লেখ আছে। তা জেনে ওই ইহুদি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করেন।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সব ক্ষেত্রে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণের তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর