মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ঋণ খেলাপ রোধে আইন

শাস্তির পরিধি বাড়াতে হবে

ঋণ খেলাপ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এক মূর্তমান অভিশাপ। এ অভিশাপ দেশের অর্থনীতিকে আপন মহিমায় আত্মপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঋণখেলাপি নামের আপদেরা। ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে জড়িত শীর্ষ কর্তাদের একটি অসৎ অংশ, গুটিকয় অসৎ ব্যবসায়ী ও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সততার সংকটে ভোগা কিছু মানুষ দেশের ব্যাংকগুলোর অর্থকড়ি লোপাট করছে ব্যাংক ঋণ নিয়ে লোপাট করার ঘৃণ্য পদ্ধতিতে। ঋণখেলাপি নামের সুবেশী নোংরা লোকদের সামাল দেওয়ার কোনো কর্তৃপক্ষ দেশে না থাকায় অপরাধবান্ধব পরিবেশে তারা লুট কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এ নৈরাজ্য ঠেকাতে স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপিদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা, গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্তি ও বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির বিধান রেখে নতুন ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২০-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। নতুন এ আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যারা স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপি হবেন তারা রাজনৈতিক কোনো পদ পাবেন না। এমনকি এরা বিদেশ ভ্রমণ কিংবা গাড়ি, বাড়ি রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না। ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু থেকে শুরু করে কোম্পানি নিবন্ধন করতেও পারবেন না তারা। এ ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে সরকার। স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপিদের প্রতি দৃশ্যমান কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নতুন ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২০ তৈরি করতে যাচ্ছে সরকার। আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আইনের খসড়াটি রবিবার সবার মতামতের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করা হয়েছে। এরপর তা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পরবর্তী ধাপে তা অনুমোদনের জন্য জাতীয় সংসদে তোলা হবে। ঋণখেলাপি ঠেকাতে এ অপকর্মের হোতাদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করার প্রস্তাব দৃশ্যত একটি ভালো উদ্যোগ। তবে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত মতলববাজদের বাদ সাধতে আইনটি কতটা সুফল দেবে, তা স্পষ্ট নয়। আমাদের মতে, শুধু ঋণখেলাপি নয়, তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে একই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবতে হবে। তা না হলে কোটি কোটি টাকা লুটের  হোতাদের বাদ সাধা আসলেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর