বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু

সড়ক নৈরাজ্যের অবসান কাম্য

সড়ক দুর্ঘটনায় আবির নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছে। সোমবার ছিল ওদের স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা। স্কুলজীবনের শেষ দিনে সহপাঠীদের সঙ্গে গল্প করছিল আবির। পুরান ঢাকার ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে হঠাৎ করে পেছনের দিকে টার্ন নিতে গিয়ে তাদের ওপর চাড়ও হয় ওয়াসার পানিবাহী ট্রাক। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় আবির। ৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল যে শিক্ষার্থী তাকে কেড়ে নিল বেপরোয়া ড্রাইভিং। এ ঘটনায় চালক চুন্নু মিয়াকে আটক করা হয়েছে। প্রতিবাদে আবিরের সহপাঠীরা ওয়ারী স্ট্রিট সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। ঘণ্টাখানেক পরই সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিক্ষোভে যোগ দেন শিক্ষক ও এলাকাবাসীও। ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী আবিরের লাশ দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রাকটি খুব দ্রুত এসে আবিরের শরীরের ওপর দিয়ে যায়। আবিরের মা মারা গেছেন ১১ মাস আগে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সে ছিল তৃতীয়। তার বড় ভাই আট বছর আগে গুলিস্তান পার্কের পুকুরে গোসল করতে নেমে ডুবে মারা যায়। তার বাবা হানিফ মিয়া নবাবপুরে মেশিনারি পার্টসের ব্যবসা করেন। শেষ দিনে নিজে পুত্রকে তিনি স্কুলে পৌঁছে দেন। কিন্তু তাকে লাশ হিসেবে ফেরত পাবেন তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি। এক ছেলে পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার সাত বছর পর স্ত্রীর মৃত্যু এবং তার ১১ মাস পর একমাত্র ছেলের গাড়িচাপায় লাশ হয়ে যাওয়ার ঘটনা আবিরের বাবা হানিফ মিয়াকে শোকে স্তব্ধ করে ফেলেছে। শুধু তার বাবা নন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কান্না ওয়ারী স্কুলের পরিবেশকে শোকাতুর করে তোলে। শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকরা ঘাতক চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিদিনই কেড়ে নিচ্ছে প্রায় এক ডজন মানুষের প্রাণ। সড়ক নৈরাজ্য থামাতে গণসচেতনতা গড়ে উঠবেÑ আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর