রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বাড়ছে ডলারের দাম

বিনিয়োগে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে

ডলারের মূল্যবৃদ্ধি বিনিয়োগ ক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। শিল্প উদ্যোক্তাদের মূলধনি মেশিনপত্র আমদানিতে বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে। পিয়াজ, রসুন, আদা, ভোজ্যতেল, গম, ডাল, চিনিসহ ভোগ্যপণ্যের এক বড় অংশ আমদানিনির্ভর হওয়ায় এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে সরকারের সুনাম। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে- এমন অভিযোগ জোরদার হয়ে উঠছে। ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রার দাম বৃদ্ধির মানেই হলো অলক্ষ্যে দেশীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন। এর ফলে অজান্তে নাগরিকদের গচ্ছিত অর্থ কমে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী গত ১৯ বছরে ডলারপ্রতি দাম ৩৪ টাকা বেড়েছে। ২০০০ সালে আন্তব্যাংক লেনদেনে ডলারের মূল্য ছিল ৫৪ টাকা। ২০১০ সালে তা বেড়ে হয় ৭১ টাকা। আর বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ টাকার বেশি। এর সঙ্গে রয়েছে উচ্চ সুদহার। ব্যাংকের আরও নানা লুক্কায়িত চার্জ মেটাতে গিয়ে শিল্প খাতে বিনিয়োগকারীদের নাভিশ্বাস উঠছে। বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহারের কারণে ব্যবসায়ীরা ডলার পাচ্ছেন না। সংকটের কারণে প্রতিদিন খোলাবাজারে নগদ ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার পরও ঘাটতি মেটানো যাচ্ছে না। ডলার সংকটের অন্যতম কারণ অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া। দেশে ভোগবিলাসের পণ্য আমদানি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধির হার সন্তোষজনক হলেও আমদানি ব্যয় স্পুটনিক গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারসাম্যহীন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের শিল্প স্থাপনের মেশিনপত্র বা শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে যেমন বেশি দাম দিতে হচ্ছে তেমন আমদানিনির্ভর ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তাদের বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। ডলারসহ বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে টাকার দাম কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। জাতীয় অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে ডলারের দাম বৃদ্ধি রোধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিলাসসামগ্রী আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সস্তা জনপ্রিয়তা কিংবা বাহবা আদায়ের বদলে বাস্তবতাকে বিবেচনায় আনতে হবে। বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধেও নিতে হবে উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর