ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে পৃথিবীতে শান্তি বজায় রাখার জন্য গুরুত্ব প্রদান করেছে। মানবজাতির কল্যাণ নিশ্চিত করতে ঐশীগ্রন্থ কোরআন শরিফ আল্লাহর তরফ থেকে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। কোরআন শরিফের মাধ্যমে হজরত মুহাম্মদ (সা.) মানুষকে শাশ্বত কল্যাণের দিকে আহ্বান করেছেন। যেহেতু ইসলাম ধর্ম হচ্ছে শান্তির ধর্ম; স্বাভাবিকভাবেই এ ধর্মের আলোকবর্তিকা হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন শান্তিবাদী। তাঁর প্রচারিত ইসলাম ধর্ম যারা অনুসরণ করে তাদেরও এ জন্য নামকরণ করা হয়েছে মুসলিম। যার অর্থ শান্তিপ্রিয়। এবং ইসলাম ধর্মে একে অপরকে সালাম দেওয়া অর্থাৎ একে অপরের শান্তি কামনা করাও হচ্ছে ধর্মীয় রীতি। এ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, হজরত মুহাম্মদ (সা.), তাঁর প্রচারিত ধর্ম ইসলাম এবং তাঁর অনুসরণকারী মুসলিম সব কিছুই শান্তির তথা মানব কল্যাণের অভিমুখী। আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব আল কোরআনে মানব সমাজে শান্তি ও সৌহার্দ্য রক্ষায় এবং কল্যাণে অসংখ্য আয়াত রয়েছে। যেমন :  (১) ‘ভালো আর মন্দ সমান হতে পারে না; উৎকৃষ্ট কাজ দ্বারা মন্দ কাজ প্রতিহত কর’ (সূরা হামিম সিজদাহ : ৩৪)। (২) ‘মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ; কিন্তু যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে; আল্লাহ অত্যাচারীদের পছন্দ করেন না।’ (সূরা শূরা : ৪০)। (৩) ‘কোনো মানুষকে হত্যা করা কিংবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ যদি কাউকে হত্যা করে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকে হত্যা করল; আর কেউ যদি কারও প্রাণ রক্ষা করে সে যেন পৃথিবীর সবার প্রাণ রক্ষা করল’ (সূরা মায়িদাহ : ৩২)। (৪) ‘মানুষদের তাদের প্রাপ্য কম দেবে না এবং পৃথিবীতে ফেতনা-ফ্যাসাদ (বিপর্যয়) ঘটাবে না’ (সূরা শুআরা : ১৮৩)। (৫) ‘যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহের আচরণ করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি’ (সূরা শূরা : ৪২)। (৬) ‘অহংকার বশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা কর না এবং জগতে উদ্ধতভাবে বিচরণ কর না; কারণ আল্লাহ কোনো উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সূরা লোকমান : ১৮)। (৭) ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্যদানে অবিচল থাকবে। কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদের এমনভাবে প্ররোচিত করে যে, তোমরা ন্যায়বিচার করবে না। তোমরা ন্যায় বিচার কর’ (সূরা মায়িদাহ : ৮)। এ ধরনের আরও অনেক আয়াত কোরআন শরিফে আছে। কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে মানুষের মাঝে শান্তি স্থাপিত হয় ও শান্তি বজায় থাকে।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।