মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ডিজেল সংকট

সরবরাহ বৃদ্ধিই উত্তম পথ

সেচ মৌসুমের শুরুতেই ডিজেল সংকট কৃষকের মধ্যে আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) চাহিদা অনুযায়ী ডিজেল সরবরাহ করতে না পারায় সংকট দানা বেঁধে উঠছে। সেচ মৌসুম পুরোদমে শুরু হতে আরও দুই সপ্তাহ বাকি। এই সময়ের মধ্যে চাহিদা অনুযায়ী ডিজেল সরবরাহে ব্যর্থ হলে সংকট ঘনীভূত হয়ে উঠবে। বিপিসির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ডিজেলের কোনো ঘাটতি নেই। তবে গত ১৫ দিনে চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণ; যা কিছুটা অস্বাভাবিক হওয়ায় নিয়ন্ত্রিত সরবরাহ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। আর পেট্রলপাম্প মালিক সমিতি বলছে, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নেই। আমদানি পর্যায়ের সরবরাহ চেইনে কোথাও সমস্যা থাকতে পারে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ হচ্ছে না। বিপিসির চেয়ারম্যান আশ্বস্ত করেছেন, সরবরাহে কোথাও কোনো ঘাটতি নেই। আমদানি পর্যায়েও কোনো জটিলতা নেই। কয়েকটি জাহাজ বন্দরে ভেড়ার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে কোথাও কোথাও ডিজেল সংকটের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এজন্য সরবরাহের ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। ২০০৯ সালে প্রান্তিক পর্যায়ে দাম বেড়ে যাবে বা সংকট তৈরি হবে এমন গুজবে মানুষ পলিথিনে করেও ডিজেল মজুদ করেছিল। এজন্য বাজার স্বাভাবিক রাখতে সরবরাহ নীতিতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। পাশাপাশি গুজবকেই হঠাৎ চাহিদা বাড়ার কারণ বলেছেন তিনি। প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক ও শ্যালো মেশিন মালিকরা বলেছেন, ভরা মৌসুমে ডিজেলের সংকট হলে সেচকাজ ব্যাহত হবে। বাংলাদেশের কৃষি বিশেষত বোরো ধান চাষাবাদ সেচের ওপর নির্ভরশীল। ডিজেল সংকট দেখা দিলে ধান উৎপাদনে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। যৌক্তিকভাবে ডিজেল সংকটের কোনো যুক্তি নেই। শুষ্ক মৌসুমের এই সময়ে নদ-নদীর নাব্য হ্রাস পাওয়ায় অনেক সময় নৌপথে ডিজেলবাহী যান চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়। চাহিদা অনুযায়ী ডিজেলের মজুদ যেহেতু পর্যাপ্ত সেহেতু সংকটের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। আমরা আশা করব, গুজবে কান না দিয়ে কৃষক বিপিসির ওপর আস্থা রাখবেন। পাশাপাশি বিপিসির উচিত হবে সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ না করে চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। সংকট এড়ানোর সেটিই প্রকৃষ্ট পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর