শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দেশে আড়াই লাখ বিদেশি কর্মরত

বছরে পাচার হচ্ছে ২৬ হাজার কোটি টাকা

বাংলাদেশ থেকে বিদেশি কর্মীরা প্রতি বছর বেতন-ভাতার নামে ২৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। পর্যটন ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসে অবৈধভাবে চাকরি করছেন প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার কর্মী। তারা বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন। যারা বৈধভাবে বাংলাদেশে কাজ করছেন, তারাও কর ফাঁকি দিয়ে নানা অবৈধ পন্থায় অর্থ পাচার করছেন। বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে বিদেশিদের কর্মসংস্থান : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণায় দেশ থেকে অর্থ পাচারের এ চাঞ্চল্যকর তথ্য জানানো হয়েছে। টিআইবির গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে কোনো প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে হলে জনপ্রতি নিয়মবহির্ভূতভাবে ২৩ থেকে ৩৪ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। বৈধভাবে বিদেশি কর্মী আনা হলে আটটি ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। অবৈধভাবে বিদেশি কর্মী আনা হলে তিন ধাপেই নিয়োগ চক্র শেষ হয়। বেশির ভাগই পর্যটক ভিসায় এসে এ দেশে কাজ করেন। গবেষণার তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীর ন্যূনতম সংখ্যা ধরা হয়েছে আড়াই লাখ, যারা বছরে ন্যূনতম ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পাচার করেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বছরে ন্যূনপক্ষে ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। পর্যটন করপোরেশনের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালে ৮ লাখ পর্যটক ভিসা নিয়েছেন। পর্যটক ভিসায় কাজ করা নিষিদ্ধ হলেও এ ভিসায় বিদেশিরা অবৈধভাবে দেশের বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন। ৮ লাখ পর্যটকের অন্তত ৫০ শতাংশ বা ৪ লাখ ভিসা কাজের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশে আড়াই লাখের বেশি বিদেশি যেসব কাজ করেন, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে সেসব কাজ বাংলাদেশি কর্মীদের দ্বারাও করা সম্ভব। নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশ হিসেবে দেশি কর্মী নিয়োগ করলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের দক্ষ করে বিদেশি কর্মীদের ওপর নির্ভরশীলতার অবসান ঘটাতে পারেন। কিন্তু সেদিকে কেউ যান না। অথচ বাংলাদেশের লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার কর্মসংস্থানের অভাবে ভুগছে। হুমকির মুখে পড়ছে সামাজিক স্থিতিশীলতা। এ অকাম্য অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো দরকার।

সর্বশেষ খবর