জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে একজন ছাত্রীও রয়েছেন। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় র্যাগিংয়ের নামে কী ধরনের বীভৎসতা চলে দুই শিক্ষার্থীর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা তারই প্রমাণ। সিনিয়র শিক্ষার্থীদের একটি দুর্বিনীত অংশের কর্মকান্ডে প্রতি বছরই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের শিকার হন। এদের এক বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের শিকার ভুক্তভোগীরা হলেন- থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফারহানা রহমান লিয়োনা ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একটি ছাত্রীনিবাসে লিয়োনাকে ম্যানার শেখানোর নামে মাত্রাতিরিক্ত র্যাগিং করা হয়। এর ফলে মানসিক চাপে মাথা ঘুরে পড়ে যান ওই ছাত্রী। এ সময় তাকে উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, একাধিকবার র্যাগিংয়ের শিকার ইমরান হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে তার শরীরে খিঁচুনি শুরু হয়, ফলে তাকেও ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে দায়িত্বরত চিকিৎসক মমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আল জাবির সাংবাদিকদের বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে স্পষ্ট হওয়া গেছে দুই শিক্ষার্থীর ওপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করায় তারা ভীত হয়ে পড়েছেন। র্যাগিংয়ের অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চার সদস্যবিশিষ্ট অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠন করেছে। শিক্ষাঙ্গনে বিশেষত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় র্যাগিং এবং কোনো কোনো ছাত্র সংগঠনের দর্পশালী নেতাদের দাপটে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জিম্মি। তাদের সঙ্গে দর্পশালীরা প্রভুসুলভ আচরণ করেন এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। আমরা আশা করব, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের আজীবনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারসহ তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। অপরাধীদের ভবিষ্যতে সরকারি চাকরি ও নির্বাচনে নিষিদ্ধ করার কথাও ভাবা যেতে পারে।